বিদেশি বন্ধুদের স্মৃতি সংরক্ষণের অনুরোধ জুলিয়ান ফ্রান্সিসের

জুলিয়ান ফ্রান্সিস‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ সম্মাননায় ভূষিত বাংলাদেশের বিশিষ্ট বন্ধু এবং বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিক জুলিয়ান ফ্রান্সিস সব বিদেশি বন্ধুর স্মৃতি সংরক্ষণের অনুরোধ করেছেন। বুধবার রাতে বেলজিয়ামে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ফ্রান্সিস ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার ঐতিহাসিক সাক্ষাতের স্মৃতি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। 

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মৌলবাদ, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশিত পথে একটি ন্যায় ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হয়। 

অনুষ্ঠানে বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সন্তোস ঝা মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর একযোগে যুদ্ধ করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে আনার গৌরবময় অধ্যায়ের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে ভারতের পররাষ্ট্র নীতিতে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নে ওআইসি’র স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ইসমাত জাহান বাংলাদেশের সঙ্গে ওআইসি’র সুদীর্ঘ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ওআইসি’র অগ্রণী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি একজন বাঙালি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলোকে সমুন্নত রেখে একটি প্রাগ্রসর ও সহনশীল সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রবাসীদের ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ্ প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তা ও সাহসের পরিচায়ক বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের উদাহরণ টেনে বিশ্ব অঙ্গণে বাংলাদেশের উজ্জ্বলতর ভাবমূর্তি ও সক্ষমতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  ‘রূপকল্প ২০৪১’-এর আলোকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি রাষ্ট্র, সরকার এবং জনগণের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। 

অনুষ্ঠানের শেষে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পর্বে দেশাত্মবোধক গান ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কবিতা আবৃত্তি করা হয়। অনুষ্ঠানে বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশের অনারারি কনসালগণ এবং পেশাজীবী-শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা অংশ নেন।