ফরিদপুর মেডিক্যালে যন্ত্রপাতি ‘নষ্ট করার প্রবণতা’ পেয়েছে সংসদীয় কমিটি

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের আলোচিত পর্দা কাণ্ডে আর্থিক অনিয়মের পাশাপশি যন্ত্রপাতি ফেলে রেখে ‘নষ্ট করার প্রবণতা’ খুঁজে পেয়েছে সংসদীয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে সংসদীয় উপ-কমিটি বলেছে, মালামাল ক্রয় প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, কেনা মালামালের দাম বাজার মূল্যের ব্যবধান অত্যধিক, মালামাল কেনার পর যথাযথভাবে ব্যবহার না করে ফেলে রেখে নষ্ট করার প্রবণতা দেখা গেছে।

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি একটি উপ-কমিটি গঠন করে। স্থায়ী কমিটির সদস্য মুহিবুর রহমান মানিককে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের কমিটির গঠন করা হয়।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কমিটির চতুর্থ বৈঠক হয় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজে। এর আগের তিন বৈঠকে এ সম্পর্কিত সব নথি পরীক্ষা ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নেওয়া এবং সরেজমিন পরিদর্শন করে উপ-কমিটি।।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর সংসদীয় কমিটির কোনও বৈঠক না হওয়ায় উপ-কমিটি তাদের প্রতিবেদন দিতে পারেনি। রবিবার (২৪ জানুয়ারি) এই প্রতিবেদন স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জমা দেওয়া হয়।

উপ-কমিটির আহ্বায়ক মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, ‘তারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। কমিটির আগামী বৈঠকে প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হবে।

প্রতিবেদনে ‍উপ-কমিটি তাদের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশে বলেছে, রেসপনসিভ দরদাতার জায়গায় নন-রেসপনসিভ দরদাতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে কার্যাদেশ দেওয়ায় সরকারের কোটি কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। পর্দা, অক্সিজেন জেনারেশন মেশিন, লিনার অক্সিলেটর মেশিন কেনায় সরকারি নিয়ম (পিপিআর) অনুসরণ করা হয়নি। যন্ত্রপাতি পরীক্ষা না করে গ্রহণ করা হয়েছে।

কমিটি বাংলাদেশের সব হাসপাতালের যন্ত্রপাতি গুণগতমান বজায় রেখে সংগ্রহ করা হচ্ছে কিনা এবং যথাযথভাবে ব্যবহার হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে মন্ত্রণালয়কে একটি মনিটরিং টিম গঠন করতে বলেছে।

২০১৯ সালে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পর্দা ও যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ব্যাপক দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে আসে। এক পর্দার দাম ৩৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছে বলে ওই বছর সেপ্টেম্বরে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়।

পর্দা ও যন্ত্রপাতি কেনায় ১০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুদক ওই বছরের ২৭ নভেম্বর মামলা করে। হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রকেনার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ওই মামলা হয় ছয় জনের বিরুদ্ধে।