৮ কারণে চিনি শিল্পে লোকসান

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) গত ৫ বছরে তিন হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। এই সময় প্রতিষ্ঠানটির আয় হয়েছে তিন হাজার ১৪৭ কোটি ২২ লাখ টাকা আর ব্যয় হয়েছে সাত হাজার ৮৬ কোটি ২ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে বিএসএফআইসি’র লোকসানের ৮টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো-চিনির উৎপাদন খরচের চেয়ে বিক্রয় মূল্য কম, বিশ্বব্যাপী চিনির দাম কমে যাওয়া, পুঞ্জিভূত ঋণ ও সুদের পরিমাণ অনেক বেশি, অধিক চিনি সম্পৃদ্ধ, পোকাও রোগবালাই প্রতিরোধ সক্ষম আখের জাত উদ্ভাবন না হওয়া, কারখানাগুলো দীর্ঘদিনের পুরনো ও জরাজীর্ণ, বেসরকারি খাতে আমদানীকৃত ‘র’ সুগার থেকে রিফাইন্ড সুগার উৎপাদন করে কম মূল্যে বাজারজাত করা আখের মূল্য ও চিনির মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকার কারণে ক্রমাগত লোকসানের কারণে ঋণের সুদ বৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং চিনি সংগ্রহের হার কমে যাওয়া।

সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৫২৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৬৩৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ৮৩৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এক হাজার ৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৯৩৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের বর্তমানে দায় দেনার পরিমাণ আট হাজার ৮৪৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। দায় দেনার মধ্যে ব্যাংক ঋণ সাত হাজার ১৯৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা, ডিএসএল ও পাকিস্তানি ঋণ ৯৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আখের দাম ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা, বেতন বাকি ৯২ কোটি ৩ লাখ টাকা, প্রভিডেন্ট ফান্ড খাতে ১০৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা, গ্র্যাইচুইটি ২৫৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা, সরকরাহকারীদের পাওনা ১৩৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, আয়কর বাবদ ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, ভ্যাট ৯ কোটি টাকা, ডিলার জামানত ৩৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের বর্তমানে মোট পদ সংখ্যা হচ্ছে ১৭ হাজার ২৬৩টি, এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ছয় হাজার ৩১টি।

কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, এ, কে এম ফজলুল হক, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন, মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ এবং মো. শফিউল ইসলাম বৈঠকে অংশ নেন।