করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছি না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘করোনার সুনামি পৃথিবীকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। আর এটা কেবল স্বাস্থ্য সেক্টরেই না, অর্থনীতি, খাদ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা সব ক্ষেত্রেই। পৃথিবীর সব দেশের সব ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়েছে। আমরা করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করছি। হাসপাতাল বেড়েছে, আইসিইউ বেড়েছে, চিকিৎসা সম্পর্কে এখন জানা গেছে। করোনার নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে। দেশে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। এরপরও করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছি না।’

আজ বুধবার (৭ এপ্রিল) বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এবারে স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় ‘সকলের জন্য সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর বিশ্ব গড়ি’।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে ক্যানসার, কিডনি, স্ট্রোকের রোগীসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে, তাদের চিকিৎসা দিতে পারছি না।’

তিনি বলেন, ‘করোনায় সংক্রমণের হার কমিয়ে আনা গিয়েছিল। কিন্তু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানেনি, টিকা নিয়ে উদাসীনতা দেখিয়েছে। দলবেঁধে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়েছে। বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে মাস্ক ছাড়া, সামাজিক দূরত্ব না মেনে জড়ো হয়েছে। এসব কারণে এখন সংক্রমণের হার অনেক বেশি বেড়ে গেছে।’বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান

মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানেনি, আর তাই সরকারকে লকডাউন দিতে হয়েছে। একইসঙ্গে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। এখন লকডাউন চলছে। মানুষকে এখন ১৮ দফা নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য, অর্থনীতির জন্য সাধারণ মানুষকে সবকিছু ভেবে কাজ করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য দিবসের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ বিভাগের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. নাজমুল হক।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘করোনায় মানুষ শারীরিক, সামাজিক, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। নতুন ভেরিয়েন্টের কারণে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘এই করোনার সময়ে আমরা সবাই যোদ্ধা, সবাই কাজ করে যাচ্ছি।’

করোনায় যত লোকের প্রাণহানি হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক বেশি মারা যায় ক্যানসার, যক্ষ্মাসহ আরও কিছু রোগে জানিয়ে অধ্যাপক আবুল বাসার বলেন, ‘সেই হিসাব যেন ভুলে না যাই। করোনার এই সময়ে এর পাশাপাশি যেন আমরা এসব চিকিৎসাও চালিয়ে নিতে পারি।’

স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর বলেন, ‘সরকার সবাইকে বলছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য। কিন্তু মানুষ সেটা করছে না। কেন করছে না সেটাও এখন খুঁজে বের করা দরকার।’

রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার দিকে যদি নজর না দেওয়া হয় তাহলে চিকিৎসা দিয়ে সমাধান করা যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেবল স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষে নয়, এখানে অন্যান্য সব সেক্টরকে অন্তর্ভুক্ত করে এগিয়ে যেতে হবে।’