‘কসোভো হতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের প্রবেশ পথ’

ইউরোপের ছোট্ট দেশ কসোভো ২০০৮ সালে স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক দেশটির অনেক পুরনো। স্বাধীনতা অর্জনের অনেক আগে থেকেই বিশেষ করে গত শতকের শেষ দিকে কসোভোতে বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছে। ভৌগোলিকভাবে ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থানের কারণে কসোভোর সঙ্গে ঢাকার আরও সম্পর্কোন্নয়নের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন দেশটি রাষ্ট্রদূত গুনের উরেয়া।তিনি বলেন, ‘ বাংলাদেশের জন্য কসোভো হতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের প্রবেশ পথ।’

 রাষ্ট্রদূত মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও ভিশন নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক বাড়ছে। স্বাধীনতার মাসে উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে এ ধরনের সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করেন তিনি।

বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত গুনের উরেয়া বলেন, ‘কসোভো এবং বাংলাদেশের যৌথ বাণিজ্যিক উদ্যোগকেও উৎসাহিত করা উচিত। যাতে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী হতে পারে।’

উল্লেখ্য কসোভো মধ্য ইউরোপীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে স্থিতিশীলতা এবং সমিতি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো কসোভোও আইসিটি এবং অন্য কয়েকটি পরিষেবা খাতে সুনাম অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে এই দুই দেশের মধ্যে আইসিটির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়তে পারে।’

রাষ্ট্রদূত আরও  বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের গ্রীষ্ম ঋতুর ফল ও ফিশারিজ কসোভো এবং কসোভো হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপিয়ান বাজারের জন্য আকর্ষণীয় হবে। আর কসোভো ভবিষ্যতে তার ব্যবসায়িক পানীয়, আসবাব এবং খনিজ নিয়ে বাংলাদেশের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক স্থান অর্জন করতে পারে।’

কসোভোতে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্যবসা হচ্ছে তৈরি পোশাক ও ওষুধজাত পণ্য নিয়ে। দেশটিতে পাটের পরিচিতি বাড়াতে আরও বেশি কাজ করা দরকার বলে মনে করেন গুনের উরেয়া।

তিনি জানান, পর্যটনের বিষয়েও পারস্পরিক আগ্রহ রয়েছে। বিশেষত কসোভো সফর নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের  বেশ আগ্রহ রয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘সোনার বাংলা; ধারণাটির অধীনে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের সুস্পষ্ট প্রতিচ্ছবি উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি কেবল বাংলাদেশে নয় বিদেশেও সম্মানিত নেতা ছিলেন। এটি ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, একটি সমাজের জনগণ এবং নেতার সংগ্রাম অন্যান্য সমাজের জন্যও অনুপ্রেরণার কারণ হয়ে দাড়ায়। কসোভোর সমাজ ও জননেতাদের ক্ষেত্রেও এটি সত্য।

কসোভো একটি নতুন দেশ এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তিন বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কসোভো ২০০৮ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। কিন্তু বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অনেক আগেই আমাদের দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলক পন্থা অবলম্বন করেছিল।’

২০১৯ সালে ঢাকায় কসোভোর দূতাবাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে কসোভোর সম্পর্ক মাত্র তিন বছরের নয়, ঠিক যেন ৫০ বছরের।’