স্বাস্থ্যের নিয়োগে দুর্নীতি: দুদককে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান টিআইবি’র

স্বাস্থ্য অধিদফতরে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দোষীদের শাস্তি দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সোমবার (১২ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, করোনাকালে সরকারি হাসপাতালে কারিগরি জনবল ঘাটতি মেটাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্যোগে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানায় সংস্থাটি। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েই টিআইবি সন্দেহ প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘করোনা অতিমারির প্রভাবে সাধারণ মানুষের জীবন এমনিতেই ওষ্ঠাগত। এরসঙ্গে স্বাস্থ্য সেবার বেহাল দশা আর সেবার গুণগত মান নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থার ঘাটতি এ সংকটকে আরও ঘনীভূত করে তুলেছে। এরকম একটি সময়ে হাসপাতালগুলোতে কারিগরি জনবল নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা স্বাস্থ্য খাতের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের প্রতি আরেকটি বড় ধাক্কা হয়ে এলো। নিয়োগ কমিটির এক সদস্যকে সরাসরি কোটি টাকা ঘুষ দেওয়া এবং মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের প্রস্তাব দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অনিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ বিচারহীনতা উপভোগকারী কর্মকর্তাদের বেপরোয়া দুর্নীতির আরেকটি উদাহরণ মাত্র। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জরুরি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ উপলব্ধি এবং কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।’

দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে স্বাস্থ্য খাতকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য স্বাস্থ্য সচিবকে দুই কর্মকর্তা যে অনুরোধ করেছেন তার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অভিযুক্তদের নিয়োগ কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে কি তাদের কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত হয়ে যায়? ইতোপূর্বেও মাস্ক কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সেবা সরঞ্জাম ক্রয়ের ঘটনায় কাউকে দৃষ্টান্তমূলক কোনও শাস্তির সম্মুখিন করা হয়েছে বলে শোনা যায়নি। এতে এক ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এবারও আমরা দেখলাম জড়িতদের অনেকেই প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ বলয়ের অধীন থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। যখনই এ ব্যাপারে সমালোচনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে তখনই অন্যত্র বদলি বা সরিয়ে দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে দুদককে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’  

তিনি বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীরা কীভাবে প্রায় একই ধরনের উচ্চ নম্বর পেলো? পরীক্ষার প্রশ্ন কীভাবে ফাঁস হয়েছিলো? এর পেছনে কারা ছিল? সরাসরি ঘুষ প্রস্তাবের ঘটনায় অভিযুক্তদের পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ততা কতোটুকু? সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ নিয়োগ সিন্ডিকেটের সরূপ উদ্ঘাটন এবং এর মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’