(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ১৮ এপ্রিলের ঘটনা।)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেনেথ রাশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি যোশেফ সিসকো বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট কথাবার্তা বলেন। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আলোচনাকালে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে আলোচনায় সাহায্য করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব রুহুল কুদ্দুস এবং পররাষ্ট্রসচিব কাজী এনায়েত করিম।
বাসস এনা ও বিপিআই এ তথ্য দেয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাকে গঠনমূলক ও সহায়ক বলে পরে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেন কেনেথ রাশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা বহু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ভারত-বাংলাদেশ যুক্ত ঘোষণাকে সমঝোতার পথে একটা বড় পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কেনেথ রাশ হংকং থেকে ঢাকায় এসেছেন, এবং এই দিনেই কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। যাওয়ার আগে বিমানবন্দরের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মঙ্গলবার ভারত-বাংলাদেশ যুক্ত ঘোষণা আগ্রহের সঙ্গে পড়েছেন। কিন্তু এটা নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ তাদের পক্ষে উচিত বলে মনে করছেন না। ‘সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আমাদের হস্তক্ষেপ করা উচিত বলে আমি মনে করি না।’ বলেন রাশ।
উপমহাদেশে সমঝোতা সৃষ্টির প্রয়াসে তার দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) সুনির্দিষ্টভাবে সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে রাশ বলেন, বাংলাদেশ পুনর্বাসনে তার দেশ সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব অব্যাহত থাকবে।
ফরিদপুরের পর এবার মানিকগঞ্জের সাত গ্রাম
১৯৭৩ সালে চরম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পড়ে দেশ। প্রাথমিক খবরে আশঙ্কা করা হয়, টর্নেডোতে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে আড়াই হাজার। আহত ১২৭ জন হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তির খবরও প্রকাশ হয়। ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী দুর্গত এলাকা সফর করেন।
বঙ্গবন্ধু ১৯ এপ্রিল উপদ্রুত এলাকায় যাবেন বলে জানান তিনি। সেখানে নিহতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের জন্য ত্রাণ অভিযান ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু।
দর্শনা ও তার আশেপাশের মানুষজন খাদ্য সংকটের মুখে পড়ে ওই সময়। এলাকাটিতে কৃষিপ্রধান হলেও মুক্তিযুদ্ধকালে ধ্বংসযজ্ঞের ফলে অধিবাসীরা আজ পর্যন্ত কোনও সরকারি সাহায্য পায়নি। ফলে বাজারে খাদ্যদ্রব্য অগ্নিমূল্য ধারণ করে। সেসময় পত্রিকার খবরে বলা হয়, খাদ্যের অভাবে অনেকেই লতাপতা সিদ্ধ করে খাচ্ছে।