কীভাবে ভারত থেকে দেশে ফিরবেন বাংলাদেশিরা?

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার পর সেখানে থাকা বাংলাদেশিরা দেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন। গত তিনদিনে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি কলকাতা মিশনে যোগাযোগ করেছেন। এরমধ্যে প্রায় ৩৫০ জন দেশে ঢুকতে পেরেছেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।

ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা কী অবস্থায় আছে এবং ওই দেশে দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা, গৌহাটি ও মুম্বাইতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো কী করছে সে বিষয়ে একটি বৈঠক হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এখন যারা ঢুকছে এবং ঢুকবে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’

যেভাবে সনদ মিলবে

কোয়ারেন্টিন সুবিধার সীমাবদ্ধতার কারণে সব বাংলাদেশিকে একসঙ্গে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলেও তিনি জানান।

বাংলাদেশিদের ঢোকার চাপ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সাধ্যমতো সব করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশেপাশে যারা রয়েছে তারা কলকাতা মিশন থেকে, চেন্নাই, ভেলোরসহ অন্যান্য জায়গায় যারা রয়েছে তারা দিল্লি থেকে এবং মুম্বাইয়ে অবস্থানরতরা মুম্বাই মিশন থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করবে।’

বিশেষ ফ্লাইট করে বাংলাদেশিদের আনা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনও চিন্তা নেই। বর্তমানে ভারতে যে ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে সেটি যাতে বাংলাদেশে না ছড়ায় সেই জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’

দিল্লি, মুম্বাই বা চেন্নাইতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা কিভাবে দেশে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিমানে করে কলকাতা বা আগরতলা এসে সীমান্ত দিয়ে ঢুকতে হবে।

কলকাতা মিশনের প্রধান তৌফিক হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে মঙ্গলবার ২৩০ জন এবং সোমবার ১২০ জন ঢুকেছে। আমাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশিরা যোগাযোগ করছে এবং আমরা সরকারি নির্দেশনার আলোকে তাদের সার্টিফিকেট দিচ্ছি।’

এখন শুধু রোগীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ২ মে নির্বাচনের ফলাফলের পর পশ্চিমবঙ্গে কড়া লকডাউন দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ ছাড়া সীমান্ত বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে এবং আসন্ন ঈদের কারণেও অনেক বাংলাদেশি দেশে ফেরত যেতে চাইছেন।

কোভিড পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতির কারণে ২৬ এপ্রিল থেকে ১৪ দিনের জন্য ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ। তবে সেখানে থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের ভিসার মেয়াদ ১৫ দিন বা কম রয়েছে তারা যথাযথ অনুমোদন সাপেক্ষে বেনাপোল, আখাউড়া ও বুড়িমারি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করতে পারবে। তবে তাদেরকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতেই হবে।

ওই তিন বন্দর দিয়ে বাংলাদেশিদের প্রবেশের জন্য দিল্লি, কলকাতা ও আগরতলা মিশন থেকে অনুমোদন নিতে হতে হবে। প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট থাকতে হবে। ওই তিন বন্দর ছাড়া অন্য সব বন্দর দিয়ে চলাচল বন্ধ থাকবে।