শাপলা চত্বরের মতো তাণ্ডব সৃষ্টির চেষ্টা করলে যথাযথ ব্যবস্থা

ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেছেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডব অনেক বড় ঘটনা। তদন্তে তাই সময় লাগছে। অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে হচ্ছে। মামলার তদন্ত শেষ করতে না পারার আরেকটি কারণ হচ্ছে কোনও নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন দোষী সাব্যস্ত না হন। তবে কেউ যদি ফের তাণ্ডব সৃষ্টির চেষ্টা করে তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বুধবার (৫ মে) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডবের পর দায়ের করা অর্ধশতাধিক মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া সম্পর্কে একথা বলেন তিনি।

হাফিজ আক্তার বলেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে বাইতুল মোকাররমে ব্যাপক নাশকতা হয়। সেটাকে পুঁজি করে গুজব ছড়িয়ে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সিলেটসহ বেশ কটি জেলায় ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাণ্ডবে যারা জড়িত ছিল তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, যুক্তিতর্ক চলছে। সারাদেশে কীভাবে জায়গায় জায়গায় আগুন দেওয়াসহ তাণ্ডব চলেছে তা সবাই দেখেছে।

তিনি বলেন, যারা যারা নাশকতায় জড়িত ছিল, উসকানি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে। তবে কোনও নিরাপরাধী যেন শাস্তি না পায় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। কেউ যদি নিরাপরাধ হয় তা যেন আমাদের জানানো হয়। সেব্যাপারে আমরা তথ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে উদ্যোগ নেবো।

২০১৩ সালের তাণ্ডব সংশ্লিষ্ট মামলা সম্পর্কে হাফিজ আক্তার বলেন, হেফাজত নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কী বলেছেন তা আমরা জানি না। তবে যারা জড়িত ছিলেন বা সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে শুধু তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আট বছরেও কেন শাপলা চত্বরে নাশকতার মামলার তদন্ত শেষ করা যায়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ঘটনা বিশাল। দায়ের করা মামলায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হলে দরকার তথ্য-প্রমাণ। সেগুলো আমাদের সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতে হয়েছে। অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই করতে হচ্ছে। যে কারণে মামলার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে সময় লাগছে।

শাপলা চত্বরের মতো ঘটনার পরিকল্পনা বা সক্ষমতা হেফাজতের রয়েছে কি-না জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের কাজ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে যা যা করা দরকার তা আমরা করবো। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিকভাবে চলবে সেটা হেফাজতের বিষয়। আমরা চাই না ফের শাপলা চত্বরের মতো ঘটনা ঘটুক। তবে কেউ যদি তাণ্ডব চালায়, জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করে বা পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হেফাজত ইসলামের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত প্রসঙ্গে বলেন, সম্প্রতি দায়ের করা মামলার তদন্ত কাজ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য পেয়েছি। তবে আরও আনুসঙ্গিক তথ্য প্রমাণ দরকার। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।