আজ ১৭ মে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ছয় বছর প্রবাসে কাটিয়ে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সভানেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের এই দিন বিকালে ভারতের নয়াদিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। কেমন ছিল সেদিন বিমান বন্দরের চিত্র। ইত্তেফাক ও বাংলাদেশ অবজারভারের ১৮ মে’র পত্রিকায় তার কিছু বর্ণনা প্রকাশিত হয়।
ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানটি এসে পৌঁছায় বিকাল সাড়ে চারটায়। কিন্তু বিমানবন্দরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত জনতার ভিড় জমতে থাকে দুপুর বারোটা থেকে। বিমানবন্দরের রানওয়ে, টারমাক, বিমানবন্দর প্রাঙ্গণ থেকে শেওড়াবাড়ী পর্যন্ত এলাকাজুড়ে দুপুর হতে অপেক্ষা করতে থাকে দলীয় সমর্থকরা। তারা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সাড়ে চারটায় সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে বিমান থেকে ট্রাকে নামিয়ে আনেন। বিমানের দ্বারে এসে পিতা-মাতা ও পরিবারের সদস্যদের শোকাবহ মৃত্যুর স্মৃতি বেদনায় শেখ হাসিনার কেঁদে বলেন, ‘হায় আল্লাহ, কেন আমাকে এখানে আনলে?’
সংবর্ধনা সভাস্থল থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য নির্মিত হয় তিনটি তোরণ। বাস-ট্রাকে এমনকি একটি রিকশার ওপর নির্মিত হয় কয়েকটি নৌকার প্রতীক। দুই শতাধিক মোটরসাইকেল আরোহী তার সম্মানে ঢাকা থেকে মিছিল করে কুর্মিটোলা যান। বিভিন্ন জেলা থেকে দলীয় সমর্থকদের বহন করে ঢাকায় আসে বহু সংখ্যক বাস-ট্রাক। ছিল বাদকদল। সামিয়ানা টাঙানো একটি ট্রাক থেকে গণসংগীত গাওয়া হচ্ছিল। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার নামে নতুন নতুন গান শোনা গেছে সেদিন। শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিমান এসে পৌঁছানোর পূর্বপর্যন্ত কর্মীবাহিনী আনন্দধ্বনি ও স্লোগানের মাধ্যমে সমগ্র বিমানবন্দর এলাকা মাতিয়ে রাখে।
তিনটা বাজতে পাঁচ মিনিট পূর্বে ময়মনসিংহ রোডের স্বেচ্ছাসেবকরা পুলিশ বেষ্টনি সরিয়ে দৌড়ে বিমানবন্দর ভবনের দিকে ছুটে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানবন্দর ভবনের অংশবিশেষ লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। স্বেচ্ছাসেবীরা তাদের সরিয়ে নেন। চারটার দিকে রানওয়ে লোকারণ্য হয়ে উঠলো। পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা মাঠে প্রবেশ করে এ সময় বিমান অবতরণের জন্য এই এলাকা মুক্ত রাখতে চেষ্টা করছিল। এখান থেকে বের হয়ে জনসভার উদ্দেশে রওনা হন নেতাকর্মীরা।