জুলাই থেকে ভাসানচরে জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা দেখতে চায় সরকার

তিন হাজার কোটি টাকা খরচ করে ভাসানচরে তৈরি আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে নিয়ে যেতে চায় সরকার। ইতোমধ্যে ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা সেখানে স্বেচ্ছায় গেছেন। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছে জাতিসংঘ। সেখানে তাদের মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে এই দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করে জাতিসংঘ। অবশেষে এ বছরের শুরুতে তাদের একটি টেকনিক্যাল টিম ভাসানচর পরিদর্শন করে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুলাই থেকে ভাসানচরে জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা দেখতে চায় সরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘‘ত্রাণ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি এক মাসের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে জাতিসংঘ কীভাবে ভাসানচরে সম্পৃক্ত হতে পারে, তার ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ ঠিক করবে এবং সুপারিশ করবে। আমরা আশা করবো, যত দ্রুত সম্ভব জাতিসংঘ ভাসানচরের মানবিক অপারেশনে  সম্পৃক্ত হবে।’

জাতিসংঘের সঙ্গে আগামী সপ্তাহ থেকে আলোচনা শুরু হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরপর এক মাসের মধ্যে সুপারিশ করা হবে। এই কমিটি করা হয়েছে যাতে করে জাতিসংঘকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করতে না হয়।’

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এখন বর্ষা মৌসুম শুরু হচ্ছে। সে কারণে এ মুহূর্তে নতুন কোনও রোহিঙ্গা ভাসানচরে নেওয়া হবে না। কিন্তু সেপ্টেম্বরের পর থেকে এক লাখ রোহিঙ্গা নেওয়ার কাজ পূর্ণ উদ্যমে শুরু হবে।’

ভাসানচরে অর্থায়ন কীভাবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ তার মতো করে তহবিল সংগ্রহ করবে। জেআরপির কাঠামোর মধ্যে, অথবা এর বাইরে গিয়ে তারা অর্থের ব্যবস্থা করতে পারে।’

ভাসানচরে নোয়াখালী জেলা প্রশাসন কাজ করবে। এ কারণে কক্সবাজারে জাতিসংঘ যেভাবে কাজ করে, তার থেকে এটি ভিন্ন হবে বলে তিনি জানান।

জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘জাতিসংঘের যে পর্যালোচনা সেটি বেশি আপত্তিকর না। আমরা সবগুলোই করছি এবং সেগুলো কীভাবে আলোচনার মাধ্যমে আরও ভালোভাবে করা যায়, সেটি আমরা দেখবো।’

তিনি বলেন, ‘যেমন তারা বলেছেন—দুর্যোগ হলে কী করা হবে। সেটির জন্য ভাসানচরে আমরা উঁচু বাঁধ দিচ্ছি। তাদের এই উদ্বেগ আমরা সুরাহা করছি।’

তাদের আরেকটি বিষয় হচ্ছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও ভালো করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা একমত। সেখানে বর্তমানে অপারেশন থিয়েটার নেই। জরুরি অবস্থায় নোয়াখালী নিয়ে যেতে হচ্ছে। আমরা একমত যে এগুলো আমরা করবো বলে তিনি জানান।