তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন চান ১৫২ এমপি, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবিতে ১৫২ জন সংসদ সদস্যদের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট চিঠিটি হস্তান্তর করেন ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’-এর চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তামাক নির্মূলে সংসদ সদস্যদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি জানান, সংসদ সদস্যদের এই দাবি বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

এ সময় ১৫২ জন সংসদ সদস্যের স্বাক্ষরিত চিঠিতে তামাকের নিয়ন্ত্রণে আইন সংশোধনের গুরুত্ব ও এর কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, দেশের ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ তামাকদ্রব্য ব্যবহার করেন এবং তামাকজনিত কারণে দেশে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যান। এর ভয়াবহতা অনুধাবন করে প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাক নির্মূলের সাহসী ঘোষণা দিয়েছেন এবং এফটিসিটির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যমান আইন সংশোধনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। সব সংসদ সদস্যকে সমন্বয় করে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম জনস্বাস্থ্য বিষয়ক অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে আমরা আপনার নিকট ১৫২ সংসদ সদস্যদের সুপারিশকৃত চিঠিখানা হস্তান্তর করছি এবং দেশের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি জানাচ্ছি।’

চিঠিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর আলোকে সংশোধিত আইনে ছয়টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ জানানো হয়। এরমধ্যে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্তসহ সব পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ করা, বিক্রয় স্থলে তামাকজাত পণ্য দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর নিষিদ্ধ করা, খুচরা সিগারেট বা বিড়ি বিক্রি বন্ধ করা, ই-সিগারেট আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং তামাকপণ্য মোড়কজাতকরণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কথা উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’ সংসদীয় ফোরাম দীর্ঘদিন ধরে তামাক নিয়ন্ত্রণে নীতিনির্ধারণী পর্যায় ও জনমত গঠনের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। আইন সংশোধন ছাড়াও ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা এবং বর্তমান বাজেটে তামাকের ওপর যুক্তিযুক্ত কর বৃদ্ধির মাধ্যমে বাড়তি রাজস্ব আয়ের পরামর্শ দিয়ে আসছে তারা।