বিদেশি পর্যটকদের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে মডেল মসজিদে

সরকারিভাবে নির্মিত মডেল মসজিদ কাম ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার মধ্যে বিদেশি পর্যটকদের আবাসনের ব্যবস্থাও থাকবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। এ ছাড়াও মসজিদগুলোতে নারী ও পুরুষদের জন্য অজু ও নামাজের পৃথক কক্ষ, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হেফজখানা, গণশিক্ষা কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র, পাঠাগার, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, জানাজার ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন, অটিজম কর্নার ও ই-কর্নার থাকবে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

বুধবার (৯ জুন) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এ সময় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নূরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১০ জুন) প্রধানমন্ত্রী ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ১টি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা ২০১৪ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে ইসলামি মূল্যবোধের উন্নয়ন এবং ইসলামি সংস্কৃতি বিকাশের উদ্দেশ্যে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি আজ বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও সরকার একসঙ্গে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে।

ফরিদুল হক খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক ২০১৮ সালের ২৬ জুন একনেক সভায় ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে মোট আট হাজার ৭২২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে অনুমোদিত হয়। ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের আটটি বিভাগের নয়টি স্থানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

প্রতিটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ৪৩ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে নির্মিত হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এরমধ্যে জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে চারতলা, উপজেলা পর্যায়ে তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা (নিচতলা ফাঁকা) মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহর ও ৩টি সিটি করপোরেশনে ৫টিসহ মোট ৬৯টি চারতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি এবং সি-ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।

মসজিদগুলো সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করবে বলে আশা প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ভূমিকা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, ধর্মীয় সভা-সেমিনার আয়োজন, হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণ, হামদ-নাত-কেরাত প্রতিযোগিতা তথা ইসলামিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।