ঢাকায় ফিরে ত্রাণ বরাদ্দ দিলেন বঙ্গবন্ধু

বন্যা উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করে ঢাকায় ফিরে ১৮ লাখ টাকা ও ৫০ হাজার মণ গম বরাদ্দ করলেন বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নাটোর থেকে ঢাকায় ফিরে বন্যাদুর্গত অঞ্চলের জনসাধারণের মধ্যে বণ্টনের জন্য এ টাকা ও ত্রাণ হিসেবে ৫০ হাজার মণ গম দেওয়ার ঘোষণা করেন তিনি।

দেশের বন্যা কবলিত জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম সদর পরিদর্শন করে নাটোরে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন শেষ করে বঙ্গবন্ধু ঢাকা ত্যাগ করেন। রাজধানীতে আসার আগে প্রধানমন্ত্রীর নাটোরের উত্তরা গণভবন উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে তিনি সভাপতিত্ব করেন এবং প্লাবিত এলাকায় ত্রাণ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

ফিরে এসে সাংবাদিকদের কাছে বঙ্গবন্ধু বলেন, দেশের বন্যাদুর্গত অঞ্চলে মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য সম্ভাব্য সব কিছু করা হবে। কাউকে কষ্ট পেতে দেওয়া হবে না।

এদিন ঘোষিত বরাদ্দের আগেই প্রায় ১৮ লাখ টাকা মঞ্জুর করে তা দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সাহায্য বাবদ বরাদ্দ ৫০ হাজার মণ গমের ৪৭ হাজার মণ বণ্টন করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি দুর্গত এলাকার লোকদের মধ্যে প্রয়োজনমতো লুঙ্গি ও শাড়ি দিতে বলেন। কুড়িগ্রাম জামালপুর সফরকালে বন্যা নিয়ন্ত্রণমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী সোহরাব হোসেন ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। নাটোরের উত্তরা গণভবনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মালেক উকিল ও চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।

image1 (38)২১৫ কোটি টাকার পণ্য আমদানি করা হবে

জুলাই থেকে ডিসেম্বর বাণিজ্য মৌসুমে বিদেশ থেকে ২১৫ কোটি টাকার পণ্য আমদানি করা হবে বলে জানানো হয়। এরমধ্যে ৫৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার ভোগ্যপণ্য আমদানির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। বাকি টাকা শিল্পজাত দ্রব্য ও কাঁচামাল আমদানি করা হবে বলে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী এইচএম কামরুজ্জামান বলেন। যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করা যাবে বলে ধরা হয়েছে তা অত্যন্ত রক্ষণশীলভাবে করা হবে। জানুয়ারি-জুন বাণিজ্য মৌসুমে এক হাজার ২১৯ কোটি টাকার পণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে দেড় শ’ কোটি টাকার পণ্য আমদানি লাইসেন্স দেওয়া হয়।

বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে যুদ্ধবন্দিদের ফিরিয়ে আনুন

ইসলামাবাদে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন চলাকালে পরিষদ ভবনের বাইরে পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের স্ত্রী ও শিশু সন্তানদের একটি দল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে যুদ্ধবন্দিদের ফিরিয়ে আনার স্লোগান দেয়। পাকিস্তান বেতারের খবরে বলা হয় যুদ্ধাপরধীদের স্ত্রী ও সন্তানদের একটি দল শোভাযাত্রা সহকারে পরিষদ ভবনে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পাকিস্তান সরকারের প্রচার মাধ্যমগুলোর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে জনগণকে প্রস্তুত করার অভিযোগের মধ্যে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। গত সপ্তাহ থেকে পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের অনুকূলের সংবাদপত্রগুলো এবং বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ মন্তব্য প্রচার করে আসছিল।

image2 (33)৪৪০ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দানের সিদ্ধান্ত

ভারত-বাংলাদেশ স্বাস্থ্যগত কারণে আরও ৪৪০ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী ও অসামরিক ব্যক্তিকে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তান সরকারকে অবহিত করার জন্য আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির প্রধান প্রতিনিধিকে অনুরোধ জানানো হয়। এ পর্যন্ত এ ধরনের ৭৭১ জন যুদ্ধবন্দিকে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হলো। এদিনে এক সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী ভারত ও বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্যগত কারণে ৪৪০ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী ও অস্বাভাবিক ব্যক্তির আর একটি দলকে মুক্তিদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির প্রধান প্রতিনিধিকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে এবং অনুরোধ করা হয়েছে, তিনি যেন এটা পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। পাকিস্তান সরকারের সম্মতি পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১১ জুলাই সীমান্ত চৌকিতে এই সকল যুদ্ধাপরাধীকে হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভারত বাংলাদেশ সরকার জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী ইতিপূর্বে মারাত্মকভাবে অসুস্থ ও আহত পাকিস্তানের যুদ্ধবন্দি ও অসামরিক ব্যক্তিদের সময় সময় পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করেছে।