শ্রমিক সমাবেশে বঙ্গবন্ধু

মিল-কারখানা ও ক্ষেত-খামারে যেকোনও মূল্যে উৎপাদন বৃদ্ধির কাজে এগিয়ে আসার জন্য দেশের শ্রমিক, কৃষক ও মেহনতী মানুষের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাসসের খবরে বলা হয়, ১৯৭৩ সালের এদিন বঙ্গবন্ধু আরও একবার জোর দিয়ে বলেন, সকল শ্রেণির মানুষের কল্যাণ জাতীয় অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

এদিন বিকালে গণভবনের সামনে এক শ্রমিক সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধু। পোস্তগোলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে শ্রমিকরা মিছিল করে গণভবনে সমবেত হন। প্রধানমন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত ভাষণে উল্লেখ করেন, সরকার উৎপাদন বৃদ্ধি ও অন্যান্যদের ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়া পূরণ নিশ্চিত করবে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য হ্রাসে সাহায্য করবে।

বঙ্গবন্ধু বলেন, সরকার সব সময়ই তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবির ব্যাপারে সচেতন ছিল। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘তোমাদের কাছে আমার এখন দাবি- যেকোনও মূল্যে উৎপাদন বাড়াতে হবে।’

এর আগে পোস্তগোলা শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর কাছে একটি মেমোরেন্ডাম পেশ করা হয়। বঙ্গবন্ধু শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য ধৈর্য সহকারে শোনেন।

বঙ্গবন্ধুর কাছে বুমেদিনের চিঠি

রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী এদিন ঘোষণা করেন, আলজেরিয়ার জনগণ ও সরকারের সঙ্গে ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার হোক এটা বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের আন্তরিক ইচ্ছা। আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বুমেদিনের বিশেষ দূত মোহাম্মদ ইয়াজিদ এদিন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে প্রেসিডেন্টের একটি পত্র দেন। পত্রে প্রেসিডেন্ট বুমেদিন জোট-নিরপেক্ষ নীতির ভিত্তিতে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

আগামীকাল ঢাকা-দিল্লি বাণিজ্যচুক্তি

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিন বছর মেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এদিন প্রকাশিত খবরে বলা হয়, উভয়দেশের মন্ত্রীপর্যায়ে বাণিজ্যচুক্তিতে সই করা হবে। সফররত ভারতীয় বাণিজ্যমন্ত্রী ডিপি চট্টোপাধ্যায় ও বাণিজ্যমন্ত্রী এইচ এম কামরুজ্জামান চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

এর আগে বাংলাদেশ ও ভারত তিন বছর মেয়াদী নতুন বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছায়। ভারত ও বাংলাদেশের সরকারি মুখপাত্ররা জানান, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন বাণিজ্যচুক্তি কার্যকর হবে। বর্তমান চুক্তির মেয়াদ ২৭ সেপ্টেম্বর শেষ হবে।

image1 (39)ফারাক্কা নিয়ে দু'দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে বিবেচনা করা হবে

এদিন বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানিসম্পদমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ জাতীয় সংসদে বলেন, গঙ্গার ওপর ফারাক্কা বাঁধ যে বাংলাদেশের জন্য একটা সমস্যা, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে বিবেচনা করা হবে। চৌদ্দগ্রাম থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য কাজী জহিরুল কাইয়ুমের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান। বন্যা নিয়ন্ত্রণমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, ফারাক্কা বাঁধ একটা সমস্যা। এর প্রতিকার সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের এপ্রিলে যখন মন্ত্রীপর্যায়ে গঙ্গার পানি বণ্টনের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়, তখন সাব্যস্ত হয় গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার বিষয় প্রকাশ করা হবে কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বিবেচনার পর যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তবে শ্বেতপত্র প্রকাশের প্রশ্ন উঠতে পারে।