রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শত্রু ভাবা ঠিক নয়: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, আদর্শ ও জনকল্যাণে অবদানই রাজনীতির মূলমন্ত্র হওয়া উচিত। দুষ্টদের লালন-পালন ও পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া রাজনীতি নয়। রাজনীতি হতে হবে পরিশীলিত, পরিমার্জিত। রাজনীতির প্রতিপক্ষকে কখনও শত্রু ভাবা ঠিক নয়। শত্রুকে নিধন করতে হবে, সশরীরে মেরে ফেলতে হবে, এটা রাজনীতি হতে পারে না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। রাজনীতির মৌলিক সত্তার জায়গায় দল-মত নির্বিশেষে আমাদের এক হতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, একটি পরিশীলিত, পরিমার্জিত, রূচিবান ও সম্ভাবনাময় ব্যক্তিত্ব ছিলেন শেখ কামাল। যিনি এ দেশের ক্রীড়াঙ্গন, সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও রাজনীতিতে অনন্য-সাধারণ অবদান রাখতে পারতেন। অথচ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের সদস্যদের সাথে তাকেও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশে আধুনিক ক্রীড়ার জনক। অপরদিকে বাঙালি সংস্কৃতিকে পূর্ণতা দেওয়ার জন্য সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারা তিনি লালন করতেন, চর্চা করতেন। অন্যদিকে রাজনীতি ছিল তার জন্মসূত্রে পাওয়া। রাজনীতিতে তিনি নিজের জায়গা দখলের জন্য কখনও ক্ষমতার অপব্যবহারের মানসিকতা দেখাননি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর শেখ কামাল সম্পর্কে বিরূপ কথা প্রচার করে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। এটা ছিল জঘন্য মিথ্যাচার।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছেন, নিজের যা কিছু সামর্থ্য, যা কিছু ভালো তা উৎসর্গ করে দিয়ে দেশের কল্যাণে ও মানুষের উন্নয়নে নিজেকে নিবেদন করার নাম রাজনীতি। বঙ্গবন্ধু জীবনে কখনোই অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তদের, কালো টাকার মালিকদের রাজনীতিতে এনে পৃষ্ঠপোষকতা দেননি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, নিজের বিত্ত-বৈভবের জন্য, প্রাচুর্যের জন্য রাজনীতি নয়। মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তার দুঃখ-কষ্টের সাথী হওয়া, গোটা জাতির স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে দারিদ্র্য, অসহায়ত্ব ও বৈষম্য দূর করার নাম রাজনীতি।

পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক চৌধুরী রওশন ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম হাওলাদার। পিরোজপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল বসু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম নারায়ণ চৌধুরীসহ পিরোজপুরের বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।