সৌদিতে বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট নবায়ন হচ্ছে হাতে লিখে!

বাংলাদেশে হাতে লেখা পাসপোর্ট বন্ধ হয়েছে ২০১৫ সালে। তখন থেকে শুরু হয় মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি)। ২০২০ সালে শুরু হয় ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট তথা ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই প্রথম ২০২১ সালের জুনে ই-পাসপোর্টের জন্য বিমানবন্দরে ই-গেট চালু হয়। কিন্তু দেশ ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশ করলেও বিদেশে সেটা বিতরণ শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ পাসপোর্ট ও বহিরাগমন অধিদফতর। বিশেষ করে সৌদি আরবে দেখা গেলো, বাংলাদেশ দূতাবাসে মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে হাতে লিখে। এর জন্য নেওয়া হচ্ছে বাড়তি চার্জও!

জানা গেছে, অধিদফতরের সার্ভারের সমস্যাই এর জন্য দায়ী। যার কারণে নতুন পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাস ও হাইকমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, পাসপোর্ট অধিদফতরের সার্ভারে কারিগরি সমস্যা দেখা দিয়েছে। সার্ভারের ধারণ ক্ষমতা শেষ হয়ে যাওয়ায় পাসপোর্ট মুদ্রণ ও বিতরণ সম্ভব হচ্ছে না।

সৌদি আরবে পাসপোর্ট নবায়ন করতে দিয়ে ৫-৬ মাস পরও হাতে পাননি অনেকেই। এতে বিপত্তিতে পড়ছেন প্রবাসীরা। কেউ ভিসার মেয়াদ বাড়তে পারছেন না, কেউ ছুটিতে দেশে আসতে পারছেন না। রাস্তায় চলাচল থেকে কর্মস্থলেও পড়ছেন ঝামেলায়। পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকলে ইকামার মেয়াদও নবায়ন সম্ভব নয়। নির্ধারিত সময়ে ইকামার মেয়াদ না বাড়লে গুনতে হবে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার টাকা জরিমানা (এক হাজার রিয়াল)।

এ অবস্থায় যারা জরুরি ভিত্তিতে দেশে আসতে চান কিংবা অন্য জরুরি সমস্যায় পড়ছেন তাদের হাতে লিখে দুই বছরের জন্য পাসপোর্ট নবায়ন করছে দূতাবাস। এর জন্য নেওয়া হচ্ছে ৫০ রিয়াল চার্জ (১১৩০ টাকা)।

মমিনুল শেখ থাকেন জেদ্দায়। তিনি বলেন, হাতে লিখে পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়িয়েছি। নবায়ন কপি পেতে ৫-৬ মাস লেগে যায়। তাই এ ব্যবস্থা।

লিখন হাওলাদার বলেন, দেরিতে ইকামার মেয়াদ বাড়াতে গেলে জরিমানা দিতে হয়। দূতাবাস থেকে ঠিক সময়ে পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে পারছে না। অনেকে অবৈধ হয়ে যাচ্ছে ইকামার জন্য। জরিমানাও হচ্ছে।

সৌদি আরব থাকেন সামিউল। বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জেদ্দা বাংলাদেশ কনসুলেট অফিসে ২ জুন পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেছি। তারা বলছে ৪ মাস পর যোগাযোগ করতে। অথচ আমাদের সঙ্গে ভারতীয় যারা আছে, তারা এক সপ্তাহের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছে। তাদের দূতাবাসেও যেতে হচ্ছে না। দূতাবাস থেকে তাদের পাসপোর্ট বাসায় চলে আসছে। অথচ আমাদের এত হয়রানি!’

ই-পাসপোর্ট চালুর সময় ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর জানিয়েছিল, বর্তমানে ছয় মাসের বেশি মেয়াদ থাকা এমআরপি’র মেয়াদ শেষ হলে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে। নতুন করে আবেদনকারীদেরও দেওয়া হবে। বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও দূতাবাস ও মিশনের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট আবেদনের সুবিধা রাখা হবে। এত ঘোষণার পরও তা শুরু করতে পারেনি পাসপোর্ট অধিদফতর।