গঠনমূলক মনোভাব নিতে হবে পিন্ডিকে

১৮ আগস্ট দিল্লিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে দ্বিতীয়দফা বৈঠক শুরু হবে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আজিজ আহমেদের নেতৃত্বে পাকিস্তানের প্রতিনিধিদল এরইমধ্যে সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছান। ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতা পি এন হাকসার বিমানবন্দরে পাকিস্তানি দলকে অভ্যর্থনা জানান।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হাকসার এদিন বিকালে ঢাকা থেকে দিল্লি পৌঁছান। পাকিস্তানের সঙ্গে অনুষ্ঠিতব্য দিল্লি-বৈঠকের জন্য তিনি যৌথনীতি গ্রহণ নিয়ে ‘পরিপূর্ণ সমঝোতা’ নিয়ে ঢাকা ত্যাগ করেন বলে জানানো হয়।

ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে ও দিল্লিতে পৌঁছে হাকসার সাংবাদিকদের বলেন, পাকিস্তানি প্রতিনিধিরা যদি গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে বৈঠকে মিলিত হন, তা হলে ভারত-পাকিস্তান বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে আশাবাদী হওয়ার কারণ রয়েছে। তবে এটাই শেষ বৈঠক হবে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জবাব এড়িয়ে যান।

দিল্লিতে শান্তি মিশনে পাকিস্তান

এদিকে পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের নেতা আজিজ আহমেদ দিল্লিতে আশা প্রকাশ করেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত মানবিক সমস্যাবলীর সমাধান কল্পে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দূত-পর্যায়ে বৈঠক শুরু হতে যাচ্ছে। এ বৈঠক হবে চূড়ান্ত এবং সুনির্দিষ্ট।

রাওয়ালপিন্ডি থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরে সাংবাদিকদের আজিজ আহমেদ বলেন, আলোচনার পথে কোনও প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে আলোচনাতেই তা দূর করতে হবে। তিনি বলেন, তার প্রতিনিধিদল দিল্লিতে শান্তি মিশনে এসেছে। এই দ্বিতীয় দফা বৈঠকে উপমহাদেশের অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর নিষ্পত্তি হবে।

এর আগে ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে বিমানবন্দরে হাকসার সাংবাদিকদের কাছে আশা প্রকাশ করে বলেন দ্বিতীয় দফা বৈঠক নিয়ে তিনি আশাবাদী।

তিনি আরও বলেন, ভুট্টো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে বাণী পাঠিয়েছেন তা পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের প্রকৃত কাজকর্মে প্রতিফলিত হবে। তিন দিনব্যাপী ঢাকা সফরের উদ্দেশ্যে হাকসার বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করে বরাবরের মতো এবারও আমরা সমঝোতায় পৌঁছেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের বিশেষ দূত জানান ঢাকায় তাদের অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলাপ হয়েছে এবং নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানের সঙ্গে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় দফা বৈঠকে যে সমস্ত বিষয়ে উদ্বেগ ছিল সেগুলোর ব্যাপারে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়েছেন।

গঠনমূলক মনোভাব কী?

গঠনমূলক মনোভাব বলতে তিনি কী বোঝেন তা ব্যাখ্যা করতে অনুরোধ করা হলে হাকসার জানান, এটা দিয়ে তিনি উপমহাদেশের মানবিক সমস্যাবলীর সমাধানের জন্য বাংলাদেশ-ভারত যুক্ত ঘোষণাটি বাস্তবায়নের পক্ষে সহায়ক মনোভাবকে বুঝিয়েছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রসঙ্গ-বহির্ভূত কোনও বিষয় উঠেছে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যুক্ত ঘোষণা সম্পর্কিত বিষয় ছাড়া কোনও অপ্রাসঙ্গিক বিষয় বৈঠকে ওঠেনি।

যারা বলছেন বৈঠকে প্রসঙ্গ-বহির্ভূত বিষয় উঠেছে তারা স্পষ্টত বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইবেন। পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের প্রসঙ্গ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারতীয় বিশেষ দূত বলেন, ‘এটি অবশ্যই একটি প্রসঙ্গ বহির্ভূত বিষয়।’

ঢাকায় অবস্থানকালে হাকসার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে চারদফা বৈঠকে মিলিত হন। এসব বৈঠকে ভারতের পক্ষে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা কেবল সিং ও কে পি এস মেনন। অপরপক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনকে সহায়তা করেছেন সেক্রেটারি এনায়েত করিম।

ঢাকায় ন্যায্যমূল্যে কাপড়

রাজধানী ঢাকার ১০৮টি দোকানে ন্যায্যমূল্যে কাপড় বিক্রি করা হয়েছে। কাপড় বিতরণে ছোটখাটো কিছু ঘটনা ছাড়া  বড় ধরনের কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে অনেকে অভিযোগ করেছেন, কিছু দোকানদার কাপড় বিক্রির ব্যাপারে স্বজনপ্রীতি ও কারচুপির আশ্রয় নিয়েছে।

অপরপক্ষে ঢাকার এডিসি জানান, ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকায় আরও দোকানে ন্যায্যমূল্যে বিপুল পরিমাণ জাপানি কাপড় বিক্রি করা হবে। ছয়জন ম্যাজিস্ট্রেট কাপড় বিক্রি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় নিযুক্ত আছেন। রেশন কার্ড দেখিয়ে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে কাপড় কিনছেন। যেসব কাপড় বিক্রি করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে শাড়ি, লুঙ্গি, প্রিন্ট কাপড় ও পপলিন।