নদীর পানি কমতে শুরু করেছে, বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির সম্ভাবনা

উজানে কমছে বৃষ্টি। তিস্তা ছাড়াও কমছে প্রায় সব নদীর পানি। আগামী সাতদিন এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। এতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। স্থিতিশীল আছে ঢাকার আশেপাশের নদীগুলোর পানি।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা জানান, আরও সাতদিন এই বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৫ জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে দুই নদীর পানি। ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর পানিও বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, সকল প্রধান নদ-নদীর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এর ফলে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ এবং শরীয়তপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে তিস্তা নদীর পানি কিছু বাড়তে পারে, এতে ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি থাকতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, পদ্মা নদীর চার পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। এই নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৬১, সুরেশ্বর পয়েন্টের পানি ৬৪, ভাগ্যকূল পয়েন্টের পানি ২৬ এবং মাওয়া পয়েন্টের পানি ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। এদিকে যমুনা নদীর ৫ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। এই নদীর মথুরা পয়েন্টের পানি ১২, আরিচা পয়েন্টের পানি ১৪, কাজিপুর পয়েন্টের পানি ১১, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টের ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে।

আত্রাই নদীর বাঘাবাড়ি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে গড়াই নদীর কামারখালি পয়েন্টের পানি ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এখন  প্রবাহিত হচ্ছে।  ধলেশ্বরী নদীর দুই পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে, এই নদীর এলাসিন পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৫৬ এবং জাগির পয়েন্টের পানি ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তুরাগ নদীর কালিয়াকৈর পয়েন্টের পানি  বিপৎসীমার ২১, কালিগঙ্গা নদীর তারাঘাট পয়েন্টের পানি ৩২, মেঘনা নদীর চাঁদপুর পয়েন্টের পানি ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। নতুন করে লক্ষ্যা নদীর নারায়ণগঞ্জ পয়েন্টের পানি ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের স্টেশনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে পাটেরশ্বরী স্টেশনে ৭২ মিলিমিটার। এছাড়া লাটু স্টেশনে ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া দেশের উজানে ভারতের স্টেশনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে তেজপুরে ৩৯ মিলিমিটার। এছাড়া জলপাইগুড়িতে ৩৫, চেরাপুঞ্জিতে ২৯ এবং দার্জিলিংয়ে ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের আগামী দশ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদীর পানির সমতল কমছে। জামালপুর জেলার বাহাদুরবাদ স্টেশন, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি স্টেশন, সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ স্টেশন, টাঙ্গাইল জেলার এলাসিনঘাট স্টেশন এবং মানিকগঞ্জ জেলার আরিচা স্টেশনের পানি আগামী সাতদিনের মধ্যে কমতে পারে। ফলে এসব জেলার নিম্নাঞ্চলের চলমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

এদিকে আগামী ৫ দিনে কমতে পারে গঙ্গা ও পদ্মা নদীর পানি। রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পয়েন্ট, মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূল এবং মাওয়া পয়েন্টে ও শরীয়তপুরের সুরেশ্বর পয়েন্টে পানি কমতে পারে। ফলে আগামী সাতদিনে চলমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।