করোনায় মৃত্যু: ২৬ জনের ১৫ জনই নারী

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন মারা গেছেন; যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২৭ মে ২২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর।

অধিদফতর জানাচ্ছে, মারা যাওয়া ২৬ জনের মধ্যে নারী মৃত্যু বেশি। ২৬ জনের মধ্যে ১৫ জন নারী আর ১১ জন পুরুষ।

তবে গত এক সপ্তাহের (১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর) নারী ও পুরুষের মৃত্যু তুলনায় স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে পুরুষ মারা গেছেন ১৫৪ জন এবং দুই জন অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ ১৪০ জন। এক সপ্তাহের শতকরা হিসাবে পুরুষ মৃত্যু ৫২ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং নারী ৪৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট পুরুষ মারা গেলেন ১৭ হাজার ৫২৩ জন এবং নারী ৯ হাজার ৭২৮ জন। শতকরা হিসাবে পুরুষ মৃত্যু ৬৪ দশমিক ৩০ শতাংশ আর নারী ৩৫ দশমিক ৭০ শতাংশ।

এর আগে ১৯ সেপ্টেম্বর বাদ দিয়ে পরপর দুই দিন ১৮ ও ১৭ সেপ্টেম্বরেও নারী মৃত্যু বেশি ছিল। ১৮ সেপ্টেম্বরে মারা যাওয়া ৩৫ জনের মধ্যে পুরুষ ছিলেন ১৬ জন এবং নারী ১৯ জন। তার আগের দিন ১৭ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়া ৩৮ জনের মধ্যে পুরুষ ছিলেন ১৩ জন এবং নারী ২৫ জন।

গত ১২ আগস্টে দেশে করোনা মহামারিকালে প্রথম পুরুষ মৃত্যুকে ছাড়িয়ে যায় নারী মৃত্যু। সেদিনই প্রথমবারের মতো একদিনে মৃত্যুর তালিকায় পুরুষের চেয়ে নারী বেশি ছিল। সেদিন অধিদফতর জানায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ২১৫ জনের মধ্যে পুরুষ ১০৭ জন এবং নারী ১০৮ জন।

করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে দেশে পুরুষ আক্রান্তের হার এবং মৃত্যুহার বেশি ছিল। নারীর তুলনায় পুরুষ বাইরে যান বেশি, এ কারণে তারা আক্রান্ত হন বেশি। আর আক্রান্ত হলে মৃত্যুও বেশি হবে এতদিন এটাই জানিয়ে এসেছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিল থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে নারী মৃত্যু বেড়ে যায়। আর এখন দৈনিক মৃত্যুতে পুরুষের তুলনায় কোনও কোনও দিন নারী মৃত্যু বেশি হচ্ছে।

নারী মৃত্যুর জন্য বিশেষজ্ঞরা ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের কথা বলেছেন। সেইসঙ্গে টিকা গ্রহণে নারীর পিছিয়ে থাকার বিষয়টিও কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা।

জাতীয় টিকা পরামর্শক কমিটি (ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ) নাইট্যাগ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ মনে করেন টিকা গ্রহণে পিছিয়ে থাকার কারণে নারী মৃত্যু বাড়ছে। হরমোনাল কারণে নারীরা এতদিন সুরক্ষা পেলেও টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষের এগিয়ে থাকার কারণে নারী মৃত্যু বাড়ছে।