বৈদ্যুৎচালিত বাহন উৎপাদনে গুরুত্বারোপ

অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা করেছে সরকার

অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২১ প্রণয়ন করেছে সরকার। শিল্প মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ নীতিমালার গেজেট প্রকাশ করে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে অটোমোবাইল শিল্প উৎপাদনের আঞ্চলিক কেন্দ্রে পরিণত করার লক্ষ্যে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার অটোমোবাইল শিল্পকে একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় শিল্প খাত হিসেবে বিবেচনা করছে। প্রতিবছর এ খাতে দৃশ্যমান প্রবৃদ্ধি ঘটছে এবং জাতীয় আয়ে যথেষ্ট অবদান রেখে চলেছে।

এতে বলা হয়, শিল্প খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, মানব সম্পদ এবং সরবরাহ চেইন উন্নয়ন করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সংযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে আরও বেশি উৎপাদনশীলতা দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। এই বিবেচনায় অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশে নীতিকৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন।

নীতিমালার উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে—আন্তর্জাতিক মান ও কর্মপদ্ধতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন আঙ্গিকে এ শিল্পের পুনর্গঠন; বর্তমান বিনিয়োগসমূহকে সমন্বিতকরণ এবং নতুন বিনিয়োগে আকর্ষণের জন্য একটি সক্ষম ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি; দক্ষতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রচলনে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ প্রদান; স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের মাঝে প্রতিযোগিতামূলক দামে পণ্য সরবরাহ; অটোমোবাইল শিল্প এবং এর সহযোগী বাণিজ্যিক অব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করে নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণ এবং জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার্থে দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন।

নীতিমালায় বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে একটি আধুনিক প্রতিযোগিতামূলক এবং টেকসই সরবরাহ চেইন সংবলিত দেশীয় অটোমোবাইল এবং অটো পার্টস শিল্প উৎপাদনে শক্তিশালী ভিত গড়ে তুলতে নতুন বিনিয়োগে আকর্ষণের কার্যক্রম গ্রহণ; যুক্তিসংগত শুল্ক পদ্ধতি প্রবর্তন ও আমদানি নীতি অবলম্বন; গুণগতমানের অটোমোবাইল শিল্প উৎপাদনে সহায়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা; ভোক্তা স্বার্থ নিশ্চিত করণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাংলাদেশে অটোমোবাইল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা দরকার।

নীতিমালা অনুযায়ী সরকার বাণিজ্যিক যানবাহন যেমন বাস-ট্রাক এবং মিনিবাস; প্যাসেঞ্জার ভেহিকেল (স্টেশন ওয়াগন, সেলুন হ্যাচব্যাক, ইউটিলিটি ভেহিকেল) এর স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করবে।

এতে বলা হয়, সরকারি অর্থায়নে অটো মোবাইল আনুষাঙ্গিক যন্ত্রাংশ কেনার ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদনকারীর প্রস্তুতকৃত মেড ইন বাংলাদেশ লোগো যুক্ত পণ্য অগ্রাধিকার পাবে।

এ নীতিমালা অনুযায়ী বিআরটিএ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে যানবাহনের ফিটনেস টেস্ট করার ক্ষমতা দিতে পারবে।

এ নীতিমালায় অটোমোবাইল শিল্পের বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হবে। এ ক্ষেত্রে কর রেয়াতসহ প্রণোদনা প্যাকেজের সুযোগও থাকবে।

২০৩০ সালের মধ্যে উৎপাদিত যানবাহনের একটি বিরাট অংশ বিশেষ করে প্যাসেঞ্জার এবং বাণিজ্যিক মোটর যান, যেমন: বাস-ট্রাক-থ্রি হুইলার অটোরিকশা, প্যাসেঞ্জার কার ইত্যাদিকে দ্রুত জ্বালানি সাশ্রয়ী (ইলেকট্রিক ভেহিকেল-ইভি) যানবাহন ক্যাটাগরিতে উপনীত করা হবে। এ নীতিমালা দেশে স্থানীয়ভাবে পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক শক্তি চালিত যানবাহন উৎপাদন বৃদ্ধিকে বিশেষ গুরুত্ব দেবে। যাতে করে মোটরযানের নিঃসরণ মানমাত্রা সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকে। নীতিমালা অনুযায়ী বায়ুদূষণে প্রাপ্ত জরিমানার অর্থসহ বিভিন্ন খাতের অর্থ থেকে জ্বালানি সাশ্রয়ী যানবাহন উৎপাদনে ফান্ড গঠন করা হবে।