কারাগারে বন্দি বেশিরভাগই মাদক মামলার আসামি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা যদি মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তাহলে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কারাগারে বন্দি বেশিরভাগই মাদক মামলার আসামি।’

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্রের (ওয়েসিস) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জেলখানায় ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি বন্দি রয়েছে। এখানে যে আসামি রয়েছে তার বেশিরভাগই মাদক মামলার আসামি। মাদকের ডিমান্ড হ্রাস, সাপ্লাই হ্রাস এবং হার হ্রাস—আমরা এই তিন ধরনের কাজ করে থাকি।’ এলাকায় যারা জনপ্রতিনিধি আছেন, তাদের কাছে আহ্বান রাখবো—মাদকের ডিমান্ড হ্রাসে আপনারা সবাইকে উদ্বুদ্ধ করুন।’

তিনি বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। মাদক থেকে সবাইকে বিরত রাখতে হবে। মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে তাদের জানাতে হবে। আইজি সাহেব বলেছেন, মাদক আমাদের দেশে তৈরি হয় না। এমনকি ফেনসিডিলও আমরা তৈরি করতে দিই না।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘হেরোইন-ইয়াবার পরে আসছে ভয়ানক মাদক এলএসডি। এই এলএসডি যে কতটা ভয়ানক তা আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র নিজের গলা নিজে কাটতে গিয়েছিল, সেই দৃশ্যও আপনারা দেখেছেন। আপনাদের ঐশীর কথাও মনে আছে। আপনাদের সন্তান যখন মাদকাসক্ত হয় তখন প্রকাশ করতে চান না। ভাবেন সমাজের মানুষ কী বলবে।’ যখন আপনার সন্তান মাদকাসক্ত হয়, তখন তাকে চিকিৎসার দোরগোড়ায় নিয়ে আসেন, যোগ করেন তিনি।

এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এখন কেউ প্রকাশ্যে ধূমপান করে না। তামাকের বিরুদ্ধে আমরা যে আন্দোলন শুরু করেছিলাম—তাতে মনে হয় আমরা মোটামুটি সফল হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘এখন প্রকাশ্যে কেউ ধূমপান করে না, সেই দৃশ্যটাও আমরা দেখছি। তামাক যে ক্ষতিকর সেটা আমাদের জনগোষ্ঠী জেনে গেছে। সে কারণে অনেকেই তামাক ছেড়ে সাধারণ জীবনযাপন করছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন। আমাদের পুলিশ বাহিনীর প্রচেষ্টায় আমরা সফল হয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধেও প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। সেই যুদ্ধেই আজ আমরা অবতীর্ণ। এ যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতেই হবে। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা রক্ষা করতে পারবো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে আমাদের সরকারি একটি মাদক নিরাময় হাসপাতাল রয়েছে। আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, আপনি নিজে একবার এই হাসপাতাল দেখতে যাবেন। আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এটা নিয়ন্ত্রণ করে। এই হাসপাতালে অনেক কিছু নেই, অনেক সমস্যা। তারপরেও হাসপাতালটি চলছে। আপনাদের সন্তান যখন মাদকাসক্ত হয়, আপনারা তখন প্রকাশ করতে চান না। যখন ক্ষতি হয়ে যাবে, তখন কেঁদেও কূল পাবেন না। মাদকাসক্তির হার হ্রাসের মাধ্যমে আমরা যদি ৮০ লাখ মাদকাসক্ত থেকে ৮ লাখেও আনতে পারি, এটাও আমাদের একটা সফলতা বয়ে আনবে।’