১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পরেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি অংশ, অবাঙালি ও তাদের এ দেশীয় দোসররা মিরপুরে অৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় জহির রায়হান বের হন তার ভাই শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সারের খোঁজে। এরপর তিনিও ফিরে আসেননি।
আব্দুল আলীম ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর মিরপুর থানায় সেকেন্ড অফিসার হিসেবে যোগ দেন।এরইমধ্যে জহির রায়হান নিঁখোজ হলে সরকারের আদেশে ১২নম্বর সেকশনে তদন্ত করতে যান আব্দুল আলীম, ইন্সপেক্টর ওহাহেদসহ আরও অনেকে। বাড়িতে-বাড়িতে তল্লাশি শুরু করলে বিপুলসংখ্যক অস্ত্র নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা আক্রমণ করেন। এরপর তিনি আর ফেরেননি। বুক পকেটে থাকা মেয়ের টেলিগ্রাম দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়।
শহীদ কাজী আলীমের মেয়ে বলেন, মিরপুর তখনও অবরুদ্ধ ছিল। আমরা পালিয়ে এসেছিলাম। অবরুদ্ধ মিরপুরকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, পুলিশসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকবার অপারেশন পরিচালনা করেও ব্যর্থ হন। আমার মা জানতেন বাবা জহির রায়হানকে খুঁজতে যাচ্ছেন।
৩০ জানুয়ারীর যে অভিযানের কথা জানা যায়, সে দিনের আগের দিন ২৯ জানুয়ারি শহীদুল হক মামার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা একযোগে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেছিল। শহীদুল হক মামা শাহবাগ আন্দোলনের সময় প্রতিবেদককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইতিহাস অনেক কিছু মিস করে গেছে ধীরে-ধীরে। সেদিন মিরপুরে আত্মগোপনকারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, তাদের এ দেশীয় দোসররা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আমাদের ওপর আঘাত করেছিলেন। সে দৃশ্য অসহনীয়। জহির রায়হান আগে থেকেই তার ভাইকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। নানা তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছিলেন। জহির রায়হান ৩০ তারিখের অপারেশনে ছিলেন, জোর করে গিয়েছিলেন তিনি।কিন্তু সেখানকার অবস্থা এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল যে, কেউ কাউকে খুঁজে দেখবে, সে পরিস্থিতি ছিল না।
/এমএনএইচ/আপ-এনএস/