বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

রাজধানীর পূর্বাচলে নবনির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাসহ বিভিন্ন পণ্য-ভিত্তিক মেলার স্থায়ী ভেন্যু হিসেবে বছরব্যাপী ব্যবহার হবে এই কেন্দ্র। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো। তার আশা, এটি দেশের অর্থনীতিতে নতুনমাত্রা যোগ করবে। একইসঙ্গে রফতানিও বাড়বে। তার পাশাপাশি বক্তৃতা দিয়েছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জি মিন। 

জানা যায়, ২০ একর জমির ওপর ২৪ হাজার ৩৭০ বর্গমিটার জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র। ৭৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করেছে চীনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চাইনিজ স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। এর মধ্যে চীন সরকারের অনুদান ৫২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে ২৩১ কোটি টাকা এবং রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) অর্থায়ন করেছে ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। 

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র

আধুনিক প্রদর্শনী কেন্দ্রটির মিলনায়তনের দৈর্ঘ্য ১৫ হাজার ৪১৮ বর্গমিটার। এতে স্টল আছে ৮০০টি। দোতলা পার্কিং ভবনের জায়গা ৭ হাজার ৯১২ বর্গমিটার। ৫০০টি গাড়ি রাখা যাবে এখানে। এছাড়া মূল ভবনের সামনে খোলা জায়গায় আরও একহাজার গাড়ি পার্কিংয়ের সুযোগ রয়েছে।

প্রদর্শনী কেন্দ্রের দৃষ্টিনন্দন ঢেউ খেলানো ছাদের নিচে রয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার বর্গফুটের দুটি পৃথক প্রদর্শনী হল। এছাড়া আছে ৪৭৩ আসন বিশিষ্ট একটি মাল্টি ফাংশনাল মিলনায়তন, ৫০ আসনের কনফারেন্স কক্ষ, ৬টি নেগোসিয়েশন মিটিং রুম, ৫০০ আসনের রেস্তোরাঁ, শিশুদের খেলার জায়গা, নামাজের রুম, ২টি অফিস, মেডিক্যাল বুথ, গেস্ট রুম, ১৩৯টি টয়লেট, বিল্ট-ইন পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম, নিজস্ব পানি শোধনাগার, স্টোর রুম, সিসিটিভি কন্ট্রোল রুম, অটোমেটেড সেন্ট্রাল এসি সিস্টেম, ইনবিল্ট ইন্টারনেট, ওয়াইফাই, ঝরনা, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, ইন-বিল্ট পতাকা স্ট্যান্ড এবং রিমোট-কন্ট্রোলড প্রবেশপথ।

ঢাকার শেরেবাংলা নগরের অস্থায়ী মাঠে প্রতিবছর বাণিজ্য মেলা হতো। সেখান থেকে পূর্বাচলে নির্মিত নতুন সেন্টারের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে এটি ১৫ কিলোমিটার দূরে। ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর শুরু করে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর। 

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বছরে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার বাইরে সারাবছর সোর্সিং ও পণ্য প্রদর্শনী হবে। সেজন্য পাঁচতারকা হোটেল, নতুন প্রদর্শনী কেন্দ্র, ভূগর্ভস্থ পার্কিং ইত্যাদি তৈরি হবে। এসব স্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে বাড়তি ১৭ একর জমি পাওয়া গেছে।