সহিংসতায় ইন্ধনদাতাদের নাম শিগগিরই প্রকাশ করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সম্প্রতি দেশের পূজামণ্ডপে সহিংসতায় ইন্ধনদাতাদের নাম শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১০টি মামলা হয়েছে। জবানবন্দিতে রংপুর ও নোয়াখালীর ঘটনায় ইন্ধনদাতাদের নাম বলেছে গ্রেফতারকৃতরা। তবে আমরা শতভাগ নিশ্চিত হয়ে আপনাদের সামনে নাম প্রকাশ করবো। সেখানে বিএনপি-জামায়াত আছে কিনা সেটা এখনই বলতে চাচ্ছি না। নিশ্চিত হয়েই জানাতে চাই।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন, এ দেশ সবার। এ দেশে ধর্ম নিয়ে বৈষম্য হবে না। এ দেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ। আমরা সেই আদর্শই ধারণ করে চলেছি। আমি দেখেছি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই যার যার ধর্ম পালন করে আসছেন এখানে। কিন্তু ইদানীং দেখি পূজামণ্ডপে সহিংসতা হচ্ছে। পূজামণ্ডপে কে বা কারা কোরআন শরিফ রেখে দিয়ে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। একটা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘কোরআন শরিফ রাখার পর আমরা এ ঘটনা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম, আমাদের পুলিশের সব পর্যায়ের টিম সেখানে পাঠিয়েছিলাম, যাতে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হয়। আমরা দেখলাম, মসজিদের পাশে একটা পুকুর। পুকুরে মাছ চাষ হতো। পুকুরের মাছ চাষি মসজিদের বারান্দায় একটা ক্যামেরা বসিয়েছেন। যেখানে পরিষ্কার দেখা গেছে, কেউ মসজিদ থেকে কোরআন নিয়ে হনুমানের গদার স্থানে রেখে গদা নিয়ে বেরিয়ে এলেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘যখন এ ঘটনা সামনে চলে এলো, তখন তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি, তার নাম প্রকাশ করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমাদের ধারণা ছিল জুমার নামাজের পর অসুবিধা হতে পারে। আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বলেছিলাম, তার আগেই প্রতিমা বিসর্জন দেবেন এবং তারা তা করেছেন। আমাদের নামাজও ঠিকভাবে শেষ হলো। কিন্তু, দুই ভাগে বিতর্ক শুরু হলো। একপক্ষ পুলিশের সামনে হল্লা শুরু করলো। আরেক পক্ষ পুলিশকে ব্যস্ত রেখে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করলো। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলো। সেখানে বেশ কিছু ভাঙচুর হয়েছে। ওই সময় পুকুরে ঝাঁপ দেওয়ায় একজন মারা গেছেন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই সহিংসতা সুপরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করতেই। এর মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে একটি মহল। ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। অনেকের নাম জানা গেছে। খুব শিগগিরই কারা এসব ঘটিয়েছে তা উদঘাটন করা সম্ভব হবে।’

বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।