১৯৭৩: সে বছর মধ্যপ্রাচ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে চীনের ‘না’

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর ও ১ নভেম্বরের ঘটনা।)

 

মধ্যপ্রাচ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে এক পয়সাও না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় চীন। পক্ষান্তরে সোভিয়েত ইউনিয়ন এই বাহিনীর কার্যক্রম যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ শতকরা ১২ দশমিক ১ ভাগ ব্যয় বহন করে যাবে বলে ঘোষণা দেয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব ওয়াল্ডহেইম ছয়মাসের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে জাতিসংঘ শান্তি বাহিনীর শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ব্যয় বহনের উদ্দেশ্যে তিন কোটি মার্কিন ডলার মঞ্জুর করার জন্য সাধারণ পরিষদের কাছে অনুরোধ জানান। এই অর্থের পরিমাণ জাতিসংঘের চলতি বাজেটে শতকরা প্রায় ১৩ ভাগ। মহাসচিবের অনুরোধটি প্রথমে আনুষ্ঠানিকভাবে ২৫ জাতি পরিচালনা কমিটির কাছে পেশ করা হয়। পরে বিকালে তার ওপর ১৩৫ জাতির সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কার্যক্রম নির্ধারিত হয়।

চীন জাতিসংঘ জরুরি বাহিনীর ব্যয়ভার বহনের জন্য কোনও অর্থ প্রদান করবে না বলে ঘোষণা দেয় এবং সোভিয়েত সতর্কতার সঙ্গে ঘোষণা করেছে যে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম যতক্ষণ পর্যন্ত থাকবে ততক্ষণ ১২.১ ভাগ প্রদান করবে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকার অর্থ হচ্ছে স্বস্তি পরিষদকে কঠোর নিয়ন্ত্রণাধীনে রাখতে পারা যেখানে তার অপছন্দনীয় কিছু ঘটলেও ভেটো দিতে পারবে।

সমরখন্দে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল

বাংলাদেশ উৎসবে যোগদানে উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা সমরখন্দে যায়। মধ্য এশিয়ার প্রাচীনতম এ শহর পরিদর্শন করেন তারা। সমবায় সমিতিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় সমিতির কারিগরি বিদ্যালয় ছাত্ররা বিদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের প্রতি আন্তরিক সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। এ প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন জাতির পনের শ’ ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করে।

প্রতিনিধিদলের নেতা কামরুল হাসান বলেন আমাদের বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামে কঠোর দিনগুলোতে এই বন্ধনের জন্ম হয়েছিল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ১০ দিনব্যাপী এ উৎসবের ফলে আমাদের সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে ও বিকাশ লাভ করবে।

প্রতিনিধিদলের নেতা সোভিয়েত ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংস্কৃতির সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে দাবি করে বলেন, সদ্য সমাপ্ত উৎসব দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের পরিচায়ক।

গত ১০ দিন ধরে দেশটির জনসাধারণ বাংলাদেশ সম্পর্কে আলোচনা করছে বাংলাদেশের গান ও নাচের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে। এ এক অন্য বন্ধুত্ব নিশ্চিত করবে।

কর্ণফুলী পেপার মিল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা

ওয়াগনের অভাবে কর্ণফুলী পেপার মিলের কাগজ প্রস্তুতের প্রধান উপকরণ বাঁশ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে সিলেট জেলার বিভিন্ন স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত বাঁশের লাঠি বুকিংয়ের অভাবে পড়ে ছিল। ফলে কর্ণফুলী পেপার মিলের উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানানো হয়।

সংবাদে প্রকাশ, এই সরবরাহের ওপর কর্ণফুলী পেপার মিলের উৎপাদন নির্ভরশীল। অথচ এই মূল্যবান উপকরণ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলার সরবরাহকারী বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতিপূর্বে আখাউড়া-সিলেট কর্ণফুলী পেপার মিলের বাঁশ বুকিংয়ের জন্য প্রতিদিন ৫টি করে উপাদান বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সেই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরমুহূর্তেই বন্ধ হয়ে যায়।

 

আরও আরবের কৃতজ্ঞতা

রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর নিকট আরবের আরও রাষ্ট্রের শুভেচ্ছা আসে। বিভিন্ন মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের ঈদের শুভেচ্ছা বাণী প্রেরণ অব্যাহত ছিল। আফগান প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট, বাহরাইনের আমির ইসা বিন সালমান আল খলিফা, কুয়েতের আমির সাবাহ আল সায়েম আল সাবাহ ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম নাসির ঈদের শুভেচ্ছা বাণী পাঠান।