ষড়যন্ত্রকারীদের মানুষ ক্ষমতায় আনতে চায় কিনা প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

যারা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে, তাদের মানুষ ক্ষমতায় আনতে চায় কিনা এমন প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন অগ্রগতি বাদ দিয়ে যারা মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে, রাজনৈতিক স্বার্থে জিম্মি করে, হত্যা-ষড়যন্ত্র করে, তাদের মানুষ ক্ষমতায় আনতে চায় কিনা এটাই আমার প্রশ্ন।’

বুধবার (৩ নভেম্বর) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, সহ-সভাপতি মধুসূদন মণ্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মামুনুর রশীদ, দফতর সম্পাদক সেবিকা রানী, সদস্য উম্মুল ওয়ারা সুইটি, ড. উৎপল কুমার সরকার, শেখ নাজমুল হক ও নূরে জান্নাত সীমা উপস্থিত ছিলেন।

‘আগামী নির্বাচনে পরিবর্তন আসবে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মহাসমুদ্রে আশাই একমাত্র ভরসা, এটি বিএনপির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই আশা নিয়েই উনারা বেঁচে আছেন। আশা থাকা ভালো, সবাই তো চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে না।’ 

এ সময় সাংবাদিকরা ‘রোজিনা ইসলাম একটি সংস্থা থেকে পুরস্কার পেয়েছেন, একই সঙ্গে সরকারি নথি চুরির অভিযোগে তিনি বিচারাধীন’- এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুরস্কার পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন, নেদারল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠান তাকে পুরস্কৃত করেছে এবং পাকিস্তানের একজন সাংবাদিকদের হাত থেকে তার স্বামী পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। বাকি বিষয়টা বিচারাধীন বিধায় এ বিষয়ে কিছু বলা সমীচীন নয়।’

এর আগে বিএফইউজে নেতাদের সঙ্গে সভায় হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএফইউজে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন। তারা যেভাবে সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছে, তা গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার একটি উদাহরণ। এ জন্য বিএফইউজে, নবনির্বাচিত কমিটি এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অভিনন্দন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৩ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিস্তৃতির পাশাপাশি সাংবাদিকের সংখ্যাও বেড়েছে, নানা ধরনের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। গণমাধ্যমের সমস্যাগুলো সবসময় নিজের সমস্যা মনে করে আমার শক্তি, সামর্থ্য ও ক্ষমতার মধ্যে যতদূর সম্ভব সমাধানের চেষ্টা করে এসেছি।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘উপমহাদেশে বা অন্য দেশে করোনাকালে আমাদের দেশের মতো সাংবাদিকদের সহায়তা করা হয়নি। দেশে ক্লিনফিড বাস্তবায়নের কথা বহু বছর ধরে বলা  হয়েছে, কিন্তু হয়নি। এখন ক্লিনফিড বাস্তবায়িত হয়েছে, দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল উপকৃত হচ্ছে।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘টেলিভিশন থেকে কোনও চাকরিচ্যুতি মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। করোনা চলে যাওয়ায় ব্যবসা বাণিজ্যের মতো গণমাধ্যমেও সংকট অনেকটাই কেটে গেছে।’ করোনাকালে যাদের চাকরি গেছে, তারা আবার চাকরিতে পুনর্বহাল হবেন বলে আশা করেন মন্ত্রী।’

এ সময় গণমাধ্যমকর্মী আইন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং সম্প্রচার আইন নিয়েও কাজ চলছে বলে জানান ড. হাছান। সাংবাদিকদের সুরক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে সব গণমাধ্যমকর্মীর জন্য বিমার ব্যবস্থা করলে তাদের সুরক্ষা হয়। ওয়েজ বোর্ডেও এটি বলা আছে। আমি সবাইকে অনুরোধ জানাবো, দায়িত্বশীলভাবে এটি করার জন্য। একজন সাংবাদিক এত বছর চাকরি করার পর শূন্য হাতে চলে যাবে, এটা হওয়া উচিত নয়।’