যেকোনও একটি সার্ভারের ত্রুটিতেই আটকে যায় পাসপোর্ট

জার্মানির সফটওয়্যার, বিটিসিএল, ব্যাংক এবং ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর—এগুলোর যেকোনও একটি সার্ভারে ত্রুটি দেখা দিলেই ই-পাসপোর্টের আবেদন ও টাকা জমা দিতে পারছেন না আবেদনকারীরা। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদফতর জানিয়েছে, সার্ভারের ত্রুটির কারণে এক সপ্তাহ আগে কিছু জটিলতা ছিল, এখন ঠিক হয়েছে। তবে পাসপোর্টের কাজে বিটিসিএলসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকায় একটির সার্ভারে সমস্যা হলেই সেটার প্রভাব পড়ছে বাকিদের ওপর।

ই-পাসপোর্ট আবেদনকারীরা সোনালী ব্যাংকসহ ৫টি বেসরকারি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে পারেন। এগুলো হলো—ব্যাংক এশিয়া, ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংক। সোমবার (৮ নভেম্বর) সকালে একজন ই-পাসপোর্ট প্রত্যাশী নির্ধারিত ফি জমা দিতে একে একে ব্যাংক এশিয়া, প্রিমিয়ার ও ঢাকা ব্যাংকে যান। কোথাও জমা দিতে না পেরে ফেরত যেতে হয় তাকে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের সার্ভারের সমস্যার কারণে ফি জমা নেওয়া যাচ্ছে না।

বিষয়টি জানতে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদফতরে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আমাদের সার্ভারে সমস্যা হয়েছিল। সেটা কাটিয়ে উঠেছি। দুদিন অনলাইনে আবেদন সাবমিট করা যায়নি। এখন সমস্যা নেই। আমাদের সার্ভার ঠিক আছে। তবে এ সেবায় অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান জড়িত। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, ব্যাংক, বিটিসিএল এবং সফটওয়্যার—সবই এক সুতোয় গাঁথা। এ চতুর্মুখী লিংকের যেকোনও একটিতে ত্রুটি দেখা দিলেই সেবা পেতে সমস্যা হবে।’

২০২০ সালের জানুয়ারিতে ই-পাসপোর্ট জগতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। জার্মানির সহযোগিতায় শুরুতে স্বল্প পরিসরে নাগরিকদের ই-পাসপোর্ট দেওয়া শুরু হয়। করোনার পর বিশ্ব আবার সচল হলে বেড়ে যায় পাসপোর্ট প্রত্যাশীর সংখ্যা। চাপ বাড়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরে। যে কারণে নাগরিকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী পাসপোর্ট সরবরাহ করা যাচ্ছিল না। এরমধ্যে সার্ভার ত্রুটির কারণেও গতি কমে যায়।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধূরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পাসপোর্টের কাজ এখন অনলাইন নির্ভর। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যুক্ত। কোনও একটি লিংকে সমস্যা দেখা দিলে সেবায় বিঘ্ন ঘটে। যখন যেখানে সমস্যা হচ্ছে সেটার সমাধানে দ্রুত কাজ করছি। ই-পাসপোর্ট আবেদন সাবমিট করতে অনলাইনে দুদিন সমস্যা হয়েছিল। এখন নেই।’

ব্যাংক থেকে গ্রাহকের টাকা জমা না নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকে টানা না নেওয়ার বিষয়টি এখনই শুনলাম। সমস্যা খুঁজে দ্রুত সমাধান করবো।’

এদিকে নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। করোনাকালীন পাসপোর্ট সরবরাহ কম ছিল বলে এমনটা হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। আবার অতিরিক্ত আবেদন জমা পড়ায় নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট দিতে বিলম্ব হচ্ছে বলেও কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে।

করোনার কারণে ২০২০ সালের ২৩ মার্চ থেকে নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ ও বিতরণের কাজ বন্ধ ছিল। ওই বছরের ৩১ মে থেকে সীমিত আকারে অফিস কার্যক্রম চালুর পর শুধু পাসপোর্ট রি-ইস্যু শুরু হয়। পরে অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার পর কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়।