বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নতুন সংগ্রাম শুরুর ঘোষণা

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩-৭৪ সালের ১৩ নভেম্বরের ঘটনা।)

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নতুন এক সংগ্রাম শুরুর ঘোষণা দেন ডাক ও তার বিভাগের মন্ত্রী শেখ আব্দুল আজিজ। এই দিনে বাগেরহাটের মহাকুমার ফকিরহাটে একথা ঘোষণা করেন তিনি।

শেখ আজিজ বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা একটি লড়াই শেষ করেছি। সেটি হলো রাজনৈতিক অধিকার অর্থাৎ স্বাধীনতা অর্জনের লড়াই। সেই লড়াইয়ে আমরা জিতেছি, কারণ সমস্ত জাতি বঙ্গবন্ধুর পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। আজকে আমাদের নতুন লড়াই শুরু হয়েছে। এটি হলো বাংলা গড়ার সংগ্রাম। আমরা সৌভাগ্যবান যে বঙ্গবন্ধু এই সংগ্রামে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অভাব অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আমাদের জিততে হবে।

তিনি বলেন, দেশ গড়ার কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য দেশে শান্তি দরকার। জনগণের নিরাপত্তার প্রয়োজনে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তদের সরকার বারবার হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু কয়েকবার অস্ত্র জমা দেওয়ার জন্য সময় দিয়েছিলেন। দুর্বৃত্ত দুষ্কৃতকারীরা সে কথায় কর্ণপাত করেনি। তাই এদেরকে দমন করার জন্য সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে।

সরকারের এই অস্ত্র উদ্ধারের উদ্যোগে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন যে, একশ্রেণির সংবাদপত্র মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য ও গোষ্ঠীগত স্বার্থ উদ্ধার করতে চাচ্ছে। যে সমস্ত সাংবাদিক মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তাদের কথায় কর্ণপাত না করার জন্য তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

দৈনিক ইত্তেফাক, নভেম্বর ১৯৭৩

ভারত মহাসাগরকে শান্তি এলাকা ঘোষণা নিশ্চয়তা বিধান করার আহ্বান

জাতিসংঘ মহাসচিবকে ভারত মহাসাগরে বৃহৎ শক্তিবর্গের সামরিক উপস্থিতির ওপর একটি রিপোর্ট প্রদানের আহ্বান জানিয়ে এদিন সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ১৪টি দেশের উদ্যোগে এই প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। ভারত মহাসাগরকে শান্তি এলাকা ঘোষণা করে ১৯৭১ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব আনা হয়েছিল, বর্তমান প্রস্তাবে তার প্রসঙ্গ টানা হয়।

শ্রীলংকার প্রতিনিধি হ্যানিল টন আমেরাইজিং আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। এতে ১৯৭১ সালের প্রস্তাবের নীতি ও উদ্দেশ্যগুলো গ্রহণ করে নেওয়ার জন্য সকল রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

নির্বাচন গণজীবনে শান্তি আনবে বলে আশাবাদ জিল্লুর রহমানের

আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর দেশের সর্বত্র ইউনিয়ন কাউন্সিল, শহর কাউন্সিল ও পৌরসভাগুলোর প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে—স্বাধীনত্তোর বাংলাদেশে সেটার গুরুত্ব অপরিসীম এবং এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী বলে মনে করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়েছেন তিনি।

জিল্লুর রহমান বলেন, বর্তমানে দেশের পল্লী এলাকার যথাযথভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বমূলক প্রশাসনিক কর্তৃত্ব নেই। সে পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের এই নির্বাচন গণজীবনের শান্তি প্রতিষ্ঠার সহায়ক হবে।

দৈনিক ইত্তেফাক, ১৪ নভেম্বর ১৯৭৩

ভুট্টোর এবার ইসলামিক সম্মেলন!

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে একটি ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। পাকিস্তান বেতারের খবরে বলা হয় যে, লাহোরে পৌঁছে তিনি সাংবাদিকদের কাছে পাকিস্তানকে ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনের উদ্যোগ নিতে বলার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন। যদিও তিনি এই সম্মেলন কবে নাগাদ অনুষ্ঠিত হবে সে সম্পর্কে কিছু বলেননি। তবে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আছে কিনা সে উদ্দেশ্যে আমরা মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির গতিপ্রকৃতি লক্ষ্য করছি।