ট্যুর অপারেটরদের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক, সংসদে বিল পাস

ট্যুর অপারেটরগুলোর নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে বিল পাস করেছে জাতীয় সংসদ। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) ‘বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) বিল-২০২১’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠ ভোটে পাস হয়।

এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠান এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

গত ৩ এপ্রিল বিলটি সংসদে তোলার পর তা পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

সরকার বলছে, দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডের কার্যক্রম পরিচালনা এবং পর্যটকদের স্বার্থ সংরক্ষণে নতুন এই আইন হচ্ছে।

বিলে বলা হয়েছে, কোনও ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড পরিচালনার জন্য সরকারের নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ থেকে সনদ নিতে হবে। আইনটি কার্যকর হওয়ার তিন মাসের মধ্যে বিদ্যমান ট্যুর অপারেটরগুলোকে নিবন্ধন সনদ নিতে হবে।

বিলে অনলাইন ট্যুর অপারেটরদেরও এই আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

নিবন্ধন সনদ ছাড়া কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ সেবা সংশ্লিষ্ট আবাসন, আহার বা আপ্যায়ন, পরিবহন, পর্যটন আকর্ষণ সংশ্লিষ্ট স্থান পরিদর্শন, পরিভ্রমণ সেবা বা অন্যান্য পর্যটন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করে দলভিত্তিক বা একক ট্যুর আয়োজন ও পরিচালনা ও ট্যুর গাইড হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।

বিদেশি কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাইলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে।

কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে তার জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের জেল ও দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। এই আইনের অপরাধ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিচার করা যাবে।

বিলটির জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব তোলার সময় জাপার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং বিএনপির রুমিন ফারহানা ‘মোবাইল কোর্টে বিচাররের’ বিরোধিতা করেন।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন খাত একটি সম্ভাবনাময় শিল্প। বর্তমান বাংলাদেশের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ট্যুর অপারেটররা অন্তর্মুখী ও বিদেশগামী ট্যুর পরিচালনা করে থাকে। এ সব ট্যুর অপারেটরদের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দেশে প্রচলিত কোনও আইন না থাকায় অনেক সময় পর্যটকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হন। দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে সুপরিকল্পিত ট্যুর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডের কার্যক্রম আইনের আওতায় পরিচালনা এবং পর্যটকদের স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়ন প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘আইনটি হলে পর্যটকদের কাঙ্ক্ষিত সেবাপ্রাপ্তি সহজতর হবে। পর্যটকদের স্বার্থ সংরক্ষণসহ পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডের কার্যক্রম সুষ্ঠু সুচারুভাবে আইনের আওতায় পরিচালনা করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।’