কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর: ব্রিট বাংলা বন্ধনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী অর্ধ-শতক এবং অনাগত ভবিষ্যতে এই দুই দেশের মানুষের মৈত্রী ও সংস্কৃতির বন্ধন আরও সুসংহত হবে।

শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক বার্তায় বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে ব্রিট বাংলা বন্ধনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা উপলক্ষে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার হিসেবে আমি গর্বিত যে, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে যুক্তরাজ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’

Bangabandhu and PM Edward Heathবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখার আগে, ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যে তার ঐতিহাসিক সফরে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে একটি নতুন বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন যা একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি প্রাপ্তি ত্বরান্বিত করে।

ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সফরে তিনি ঢাকা থেকে ৩৫ মাইল দক্ষিণে একটি আদর্শ গ্রাম পরিদর্শনের জন্য বাংলাদেশের ট্রেনে ভ্রমণ করেছিলেন। এরপর গত কয়েক দশকে, প্রিন্স অফ ওয়ালেস, প্রিন্সেস রয়েল, প্রধানমন্ত্রী জন মেজর, টনি ব্লেয়ায় এবং ডেভিড ক্যামেরুন একটি উদীয়মান জাতি প্রত্যক্ষ করতে বাংলাদেশ সফরে আসেন।

এই গত পাঁচ দশকে অনেক বাংলাদেশি যুক্তরাজ্যে তাদের বসতি স্থাপন করেছে। বর্তমানে প্রায় ৬ লাখ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ যুক্তরাজ্যে বসবাস করে। গত পাঁচ দশকে ব্রিটিশ ও বাংলাদেশি জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক গভীর ও শক্তিশালী হয়েছে।

বাংলাদেশের “বিশ্বের দরিদ্রতম দেশ” থেকে “বিশ্বের দ্রুততম বিকাশমান অর্থনীতি” হয়ে ওঠার অগ্রযাত্রা এবং সেই যাত্রায় যুক্তরাজ্যের অবদান নিয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত।

153371_189স্বাধীনতার প্রথম অর্ধ-শতকে বাংলাদেশ যে পরিচয় অর্জন করেছে তার জন্য বাংলাদেশ সমগ্র পৃথিবীর কাছে সমাদৃত। বাংলাদেশ এখন তৈরি পোশাক শিল্পের প্রাণকেন্দ্র, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তি ও সুরক্ষায় অন্যতম অবদানকারী এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অন্যতম প্রভাবশালী কণ্ঠস্বর। এই অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে অংশগ্রহণ করতে পেরে যুক্তরাজ্য আনন্দিত।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার আধুনিক যোগসূত্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবায়, শিক্ষা, উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রিকেট এবং রন্ধন শিল্পে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের অবদান বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ঐতিহাসিক বন্ধনের ভিত্তিতে একুশ শতকের আধুনিক অংশীদারিত্ব গঠনের বিষয়ে আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন।