১৯ মিলিয়ন ডলারে দুটি পুরাতন উড়োজাহাজ কিনেছে বিমান

বিমান বাংলাদেশ  এয়ারলাইন্স আয়ারল্যান্ড থেকে ২০০৯ সালে দুটি বোয়িং ৭৩৭ -৮০০ উড়োজাহাজ লিজ নেয়।  চুক্তির মেয়াদ শেষে উড়োজাহাজ দুটি ফেরত দিতে বিমানের খরচ হতো ৬ দশমিক শূন্য ৮ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু ফেরত না দিয়ে অতিরিক্ত সাড়ে ১৩ মিলিয়ন ডলার খরচ করে উড়োজাহাজ দুটি কিনে ফেলেছে বিমান। রাজধানীর কুর্মিটোলায় বলাকা ভবনে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে  এ তথ্য জানায় বিমান।

বিমানের পরিচালক এয়ার কমোডোর (অব.) মো. মাহবুব জাহান খান বলেন, ওই দুটি উড়োজাহাজ ৭৩৭-৮০০ মডেলের। বয়স ২০ বছরের কাছাকাছি। উড়োজাহাজ দুটি বিমান ব্যবহার হয়েছে ১২ বছর ধরে। দুটি উড়োজাহাজের চারটি ইঞ্জিন প্রায় সম্পূর্ণ ঠিক করা হয়েছে। এ দুটিকে ফেরত দিতে গেলে প্রায় ৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা (৬ দশমিক শূন্য ৮ মিলিয়ন ডলার) খরচ হবে। আর কিনতে প্রায় ১৯ মিলিয়ন ডলারের মতো লাগছে। ফলে অতিরিক্ত সাড়ে ১৩ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বিমান দুটি কিনে ফেলা হলো।

আয়ারল্যান্ড থেকে ২০০৯ সালে ইজারা নিয়ে চালানো দুটি পুরনো বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার বিষয়ে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, বিমানের পরিচালনা পর্ষদ অত্যন্ত হাই-পাওয়ারড (উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন)। এই পর্ষদ হিসাব-নিকাশ করে কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিমানটি দুটি ফেরত দিতে গেলে সমপরিমাণ টাকাই খরচ হবে। এর চেয়ে কিনলে আরও সাশ্রয়ী হবে। পর্ষদ জরিপ করে, বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এগুলো কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়েছে। বিমানের কোনও ক্ষতি হয়, এমন কিছু আমাদের উপস্থিতিতে হবে না।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বিমান দুটি ফেরত দিতে হলে তিন মাস আগে গ্রাউন্ডেড করতে হতো। ফলে একদিকে তিন মাসের জন্য দুটি গন্তব্যে ফ্লাইট বন্ধ করতে হতো, আবার এগুলোর লিজের টাকাও পরিশোধ করতে হতো। পরিচালনা পর্ষদ অবুঝ নয়। পর্ষদ সব বুঝে সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের পরেই এটা কেনা নিয়েছে।

এ সময় বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে বিমানের পরিচালনা পর্ষদ বারবার বসেছে। আমরা মনে করেছি, এই দুটি বিমান রেখে দিলে আমাদের বেশি বেনিফিট (লাভ) হবে। এ জন্য আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকা-টরোন্টো ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বিমান জানিয়েছে, টরেন্টোতে ফ্লাইট চালানোর লক্ষ্যে প্রস্তুতিও চলছে। এদিকে নিউ ইয়র্কে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দল বাংলাদেশে কাজ করছে। আর করোনার কারণে জাপানে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেই ঢাকা-নারিতা ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল বলেন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে ঢাকা-টরেন্টো ফ্লাইট চালুর বিষয়ে এগোচ্ছি। এই রুটে ফ্লাইট চালাতে গিয়ে ১৭টি শর্ত ছিল। এরমধ্যে ১৫টি পূরণ করা হয়েছে, দুটি বাকি আছে। সে কার্যক্রমও চলমান আছে। এরপর পরীক্ষামূলক ফ্লাইট যাবে। এগুলো করতে পারলেই এই রুটে ফ্লাইট চলবে। তবে ফ্লাইট শুরু করলেই হবে না, শুরু করে চালু রাখার বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভায় প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। ২৬ মার্চ উপলক্ষে এগোনো হচ্ছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, আমরা নতুন নতুন রুটে যাচ্ছি। আমরা আশা করছি অচিরেই ঢাকা-টরোন্টো, নিউ ইয়র্ক, মালেতে বিমান ফ্লাইট চালানো শুরু করবো।

টিকিটের দাম বৃদ্ধি  প্রসঙ্গে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের জন্য এটা অনেক কষ্টের ব্যাপার। সব এয়ারলাইন্সের মতো অটোমেশন পদ্ধতিতে বিমানের টিকিট বিক্রি হয়। টিকিটের দাম সহনীয় রাখতে বারবার আলোচনায় বসা হয়েছে।