আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় ‘বাংলাদেশ দিবস’ পালিত

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) শুরু হয় ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার দুই দিনের ‘বাংলাদেশ দিবস’-এর প্রথম দিনের অনুষ্ঠান। তারপর হয় দুটি সেমিনার। বিকালে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিনারের বিষয় ছিল ‘রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং তার তিনটি বই’। মূল আলোচক ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবি কামাল চৌধুরী।

জাতির পিতার তিনটি বইয়ের ওপর আলোচনা করেন কবি তারিক সুজাত, মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক চিন্ময় গুহ। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন।

সন্ধ্যায় দ্বিতীয় সেমিনারের বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশ-ভারত বই বিনিময় ও বিপণন: সমস্যা ও সম্ভাবনা’। মূল আলোচক ছিলেন ইউনিভার্সিটি প্রেস লি. (ইউপিএল) বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন।

আলোচনা করেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায়, গিল্ডের সভাপতি দে’জ পাবলিশিংয়ের সুধাংশু শেখর দে। কবিতা আবৃত্তি করেন আসলাম সানী। সন্ধ্যার সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।

‘৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০২২’-এর ফোকাল থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ। কলকাতার বিধাননগরের করুণাময়ীর সেন্ট্রাল পার্ক প্রাঙ্গণে ২৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে এই বইমেলা। চলবে ১৩ মার্চ পর্যন্ত।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে ‘বাংলাদেশ’কে থিম কান্ট্রি করে এই বইমেলার শুভ উদ্বোধন করা হয়। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড আয়োজিত ‘৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তক মেলা ২০২২-এর উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের থিম ‘মুজিব চিরন্তন’। এই থিমের ওপর ভিত্তি করে স্লোগান ‘সৃজনে মননে মানবিক দেশ/ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশ’। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল মূলত স্বাধীনতার ডাক, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের আহ্বান এবং অনুপ্রেরণা। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটিকে বিশ্ব প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করে। মুজিববর্ষে তাই বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণকে কেন্দ্র করেই এবারের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হয়েছে।