সার্বিয়ার রাস্তায় প্রাণ গেলো বাংলাদেশি কর্মীর

সার্বিয়ায় ভালো কাজ আছে— এমন স্বপ্ন দেখিয়ে ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে সেখানে পাঠানো হয় মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার জারমিতা ইউনিয়নের মধুরচর গ্রামের বাদল খন্দকারকে। বিএমইটির ছাড়পত্র নিয়ে তিন মাস আগে মেসার্স নূরজাহান রিক্রুটিং এজেন্সির (আরএল-১৩৯৪) মাধ্যমে তাকে সেদেশে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে বাদল দেখেন কোনও কাজ নেই। রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা অন্য কাজ খুঁজে নিতে বলে। ৭ মার্চ রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বাদল। সামর্থ্য না থাকায় মৃতদেহ দেশে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে তার পরিবার।

বাদল খন্দকারের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানবপাচারকারীদের প্রতারণাতেই সার্বিয়ার রাস্তায় প্রাণ গেছে তার। ৭ মার্চ রাতে বাদলের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশি কর্মীরা তার পরিবারকে মৃত্যুসংবাদ জানায়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা বললেও পরিবারের সন্দেহ এ মৃত্যু হৃদরোগজনিত নয়।

বাদল মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার মধুরচর গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে। পরিবার জানায়, সাড়ে ছয় লাখ টাকায় ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ বাদলকে মেসার্স নূরজাহান রিক্রুটিং এজেন্সি জনশক্তি ব্যুরোর ছাড়পত্র দিয়ে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর সার্বিয়া পাঠায়। চুক্তি ছিল সার্বিয়াতে কোম্পানির কাজ দেওয়া হবে বাদলকে। কিন্তু বাদল সেখানে গিয়ে কোম্পানি খুঁজে পাননি। হতাশায় দিন কাটতো তার।

স্বজনরা দালাল ও এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলে, কোম্পানি কয়েকদিন আগে বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের করার কিছুই নেই। এমন সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে উপায়ন্তর না পেয়ে বাদল সার্বিয়া থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথেই মারা যান তিনি। মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা চলছে বলে জানান পরিবার।

বাদলের ভাই সাদ্দাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার ভাইয়ের লাশের যে ছবি পাঠানো হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে না তিনি ঘরের ভেতর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি পথেই মারা গেছেন। কাজ না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। রিক্রুটিং এজেন্সি অন্য জায়গায় কাজ খুঁজতে বলেই দায় সেরেছে। আমরা এখন আর্থিকভাবে খুব ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় আছি। দেশে লাশ আনানোর সামর্থ্য নেই। মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি।