একনেকে উঠছে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো প্রকল্প

সিলেটে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো প্রকল্পটি শিগগিরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উঠতে যাচ্ছে। প্রকল্পটির যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সম্মতি পেলে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে একনেকে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, পুরোপুরি অস্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে নজির গড়েছিল সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) মূল্যায়নে বাংলাদেশের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সেরা হয়েছে সিলেটের এই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়টি। দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এর অবস্থান ৬ষ্ঠ এবং সিলেটের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম।

২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আওতাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৮১ দশমিক ৫ নম্বর পেয়ে নজির গড়েছে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়টি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টির সবার নিরলস দায়িত্ব পালনের কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হলে, এটি হবে আন্তর্জাতিক মানের একটি গবেষণাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়টি চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণাকে বেশি প্রাধান্য দেবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের চৌহাট্টায় মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়টির অস্থায়ী কার্যালয়। এটি ছিল সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পুরনো বাসভবন। সেটাকেই সংস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কার্যালয় বানানো হয়েছে। চলতি বছর থেকে শুরু হয়েছে এর প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম।

উপাচার্য জানান, সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা’ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। নতুন নামকরণের বিষয়টি সিন্ডিকেটের অনুমোদন নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টে পাঠানো হয়েছিল। তাতে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও এলাকায় ৮০ দশমিক ৩১ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের পরই নির্মাণকাজ শুরু হবে।

ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী আরও জানিয়েছেন, চলতি বছরে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজসহ ২টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, ৪টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ, ১টি সরকারি নার্সিং কলেজ, ৩টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ ও ১টি বেসরকারি ডেন্টাল কলেজসহ মোট ১১টি স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তিও করা হয়েছে। প্রফেশনাল পরীক্ষাসহ চলতি শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস, বিডিএস, পোস্ট বেসিক বিএসসি নার্সিংসহ ৪টি ক্যাটাগরিতে ৭২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। কার্যক্রম পরিচালনায় ইউজিসির অনুমতি নিয়ে সীমিত পরিসরে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেটে নতুন রূপে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগম জানিয়েছেন, প্রকল্পটির যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শেষের পথে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুশাসন রয়েছে। পরে মতামত দিয়ে অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানো হবে। বিষয়টি অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, প্রকল্পে মেদ কাটছাঁট করে দ্রুত উপস্থাপনের কথা বলা হয়েছে। শিগগিরই এটি একনেকে তোলা সম্ভব হবে।