যুদ্ধাপরাধীর নতুন তালিকা হচ্ছে না: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশে যুদ্ধাপরাধীদের নতুন তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে না। তবে ক্ষতিগ্রস্থ কেউ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।’

বুধবার (৯ মার্চ) এফডিসিতে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

মুক্তিযুদ্ধের ৪৮ বছর ২০১৯ সালে ডিসেম্বর মাসে ১০ হাজার ৭৮৯ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি প্রথম পর্যায়ের তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরে ক্রমান্বয়ে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে। তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসসহ স্বাধীনতাবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়। 

তবে প্রকাশিত তালিকায় রাজাকার ছিলেন না এমন অনেক ব্যক্তির নাম আসার অভিযোগ ওঠে। এমনকি অনেক মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের নামও ওই তালিকায় এসেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। তালিকা প্রকাশের পরপরই এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তালিকা স্থগিত করা হয়। ঘটনার প্রায় দুই বছর পর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই বিতর্ক অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করলেন মন্ত্রী।

তিনি এসময় রাজাকারের সন্তানদের সরকারি সুবিধা পাওয়া, না পাওয়ার বিষয়েও কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘রাজাকারের সন্তানেরা রাষ্ট্রীয় সুবিধা বা সরকারি চাকরি পাবে না, এই মূহূর্তে এমন কোনও আইন দেশে নাই। জনগণ চাইলে ভবিষ্যতে এ বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করা হবে।‘ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধী বা স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তানদের সরকারি চাকরি ও সুযোগ সুবিধা থেকে বিরত রাখার নজির রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে প্রতিযোগী ও বিচারকদের সঙ্গে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক

অনুষ্ঠানে দেশের চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিরও সমালোচনা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটি জাতি তখনি সভ্য ও গণতান্ত্রিক বলে বিশ্বে পরিচিত হয়, যখন তারা পরমত সহিষ্ণু হতে পারে। আমাদের বর্তমান বাস্তবতা হল আমরা কেউ কারও মুখ দেখতে চাই না, আলোচনায় বসতে চাই না। অথচ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুও দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সামরিক শাসক আইয়ুব খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

উদ্বোধনী প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল বাংলাদেশ স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে সঠিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পৃষ্ঠপোষকতায় স্বাধীনতা দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজকে পরাজিত করে বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক ড. শাকিলা জেসমিন, ড. মোহাম্মদ শাহ আলম চৌধুরী ও সাংবাদিক পার্থ সঞ্জয়।