দেড় মাসে মোটা চালের দাম বাড়েনি: কৃষিমন্ত্রী

গত দেড় মাসে দেশে মোটা চালের দাম এক টাকাও বাড়েনি। এমন দাবি কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাকের। রবিবার (২৭ মার্চ) সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আজও পত্রিকা দেখছি। প্রতিদিনই আপনারা দেখাচ্ছেন। চালের দাম বেশি, অমুকের দাম বেশি। আমি কৃষিমন্ত্রী হিসেবে বলছি, গত দেড় মাসে মোটা চালের দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। দেড় মাসে এক টাকাও বাড়েনি। এটি পরিসংখ্যান দিয়ে বলছি।’

রবিবার (২৭ মার্চ) স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ দাবি করেন কৃষিমন্ত্রী।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যমতে, ২৭ মার্চ ঢাকায় মোটা চালের দাম ৪৫-৪৮ টাকা ছিল। সরু চাল ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১ মার্চ মোটা চাল ৪৬-৫০ টাকায় এবং সরু চাল ৬২-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সরকার মোটা চাল কিনছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটার দর ৪০ টাকা। মিলাররা আমাদের কাছে এসে ধরনা দিচ্ছেন—৪০ টাকায় চাল দেবো। যদি সরকার কিনতে পারে, তাহলে কি বাজারে ৪৫ টাকার বেশি হতে পারে? কোনও দিনই না।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরু চালের দাম ৬০-৬৮ টাকা। এর চাহিদাও অনেক। একজন নিম্ন আয়ের মানুষও আজ সরু চাল খেতে চায়। তাই সরু চালের কিছু ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে দামটা বেশি।

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দাম বাড়ানোর গুজব সৃষ্টি করছে দাবি করে আবদুর রাজ্জাক বলেন, যারা পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, খাদ্যের জাহাজ ঘুরিয়ে দেশে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিল, তারাই আবার ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে।

এ নিয়ে নেতাকর্মীদের সজাগ হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে খাদ্য গুদামে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মজুত রয়েছে। এটিই শেখ হাসিনার কৌশল ও দূরদর্শিতা। ১৯ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। আমেরিকা ও ইউক্রেনের কাছ থেকে খাদ্য লাগবে না। নিজেদের মজুত দিয়েই সংকট মোকাবিলা করতে পারবো।

অপরদিকে, পেঁয়াজ পচনশীল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা ইচ্ছে করলে উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারি। কিন্তু সেপ্টেম্বর, অক্টোবর মাসে এটা পচে যায়। এ জন্য আমদানি করতে হয়। তখন দাম কিছুটা বাড়ে।

দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এক-দেড় মাস আগে দাম কম ছিল। চাষিরা আমাকে ফোন করে বলেছেন—আমরা শেষ হয়ে গেলাম। তখন আমদানি বন্ধ করে দিলাম। এতে দাম একটু বেড়েছে। তখনই লেখালেখি শুরু হয়ে গেলো দাম ৬০-৭০ টাকা। আজ পেঁয়াজের পাইকারি দাম ৩০-৩৫ টাকা। খুচরা ৪০-৪৫ টাকা।

তিনি বলেন, কেউ কেউ স্বপ্ন দেখছেন রোজার সময় পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর নিউজ করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে। তাদের বলছি, পেঁয়াজের দাম আরও কমবে।

সারে সরকার বছরে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর ৮ থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতাম সারে। এবার দিচ্ছি ২৮ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা কোথা থেকে আসবে? এটি জানেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষের প্রতি উনার অপরিসীম দরদ। ওই ২৮ হাজার কোটি টাকার বেনিফিট কে পাবে? গুলশান, বনানীর মানুষ? না, পাবে গ্রামের সাধারণ কৃষক।

গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।