বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিবের জন্মদিন আজ

দেশপ্রেমিক যুবদের সংঘবদ্ধ করে উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার কর্মযজ্ঞে নিরলস ভূমিকা রাখা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের আজ জন্মদিন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ানের ৪২ বছর পূর্ণ হলো। মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে তাকে জন্ম দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই ও এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘ইয়াং বাংলা।’

১৯৮০ সালের ২১ মে জন্মগ্রহণ করেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় রাদওয়ান। তার দুই বছরের ছোট বোন টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য।

তাদের বাবা খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ শফিক আহমেদ সিদ্দিক দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে গভর্নেন্স অ্যান্ড হিস্ট্রি বিষয়ে স্নাতক রাদওয়ান একই প্রতিষ্ঠান থেকে কমপ্যারেটিভ পলিটিক্স বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন।

তরুণ এ প্রতিভা দেশের যুব সমাজের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

‘তরুণদের সঙ্গে যোগাযোগের পদ্ধতি নিয়ে ভাবতে হবে, সব সেক্টরে আরও বেশি তরুণদের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার সময় এসেছে’— গত বছর এক অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলেছিলেন তিনি।

রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইয়ের ট্রাস্টি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি দেখভাল করেন। সিআরআইয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘ইয়ং বাংলা’র মাধ্যমে তরুণদের ক্ষমতায়ন ও উদ্বুদ্ধকরণের কাজ করছেন তিনি। ইয়াং বাংলার সদস্যরা তাকে ‘মেন্টর’ হিসেবে দেখেন। 

তরুণদের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এবং তাদের কর্মক্ষেত্র ও কর্ম পরিসর আরও বাড়ানোর জন্য সংঘবদ্ধ করার উদ্যোগ হিসেবে সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের পরিকল্পনায় ২০১৪ সাল যাত্রা শুরু করে ‘ইয়াং বাংলা’। এরপর তারুণ্যের সর্ববৃহৎ এই প্ল্যাটফর্মের প্রথম উদ্যোগ হিসেবে তরুণ সংগঠকদের প্রদান করা হয় ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড।’ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের প্রেরণায় তরুণদের উদ্ভাসিত করতে তার হাত ধরেই শুরু হয় জয় বাংলা কনসার্ট।

বর্তমানকে নিয়ে নয়, বরং আগামী দিনের পরিকল্পনা করতে পছন্দ করেন রাদওয়ান মুজিব। সে কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তার নিরলস চেষ্টা। তিনি মনে করেন, আমাদের ইতিহাসের মাঝেই রয়েছে দেশপ্রেম ও দেশগঠনে উদ্বুদ্ধ হবার প্রেরণা। আর এ কারণে গণমাধ্যম ও নিজের প্রচারণায় নয়, বরং সকল পরিকল্পনা নিয়ে নীরবে কাজ করে গেছেন আগামী প্রজন্মের জন্য।

রাদওয়ান মুজিব স্বল্প ভাষায় যতবারই গণমাধ্যমের সামনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলেছেন তা থেকে বেশ স্পষ্ট যে তিনি তার নানা বঙ্গবন্ধু, খালা শেখ হাসিনা এবং মা শেখ রেহানার মতোই একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষে অটল ও অঙ্গীকারবদ্ধ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী উপস্থাপনার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ‘গ্রাফিক নভেল মুজিব’ প্রকাশের প্রধান কারিগর ও প্রকাশক রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশের পর শিশু-কিশোর ও তরুণদের কাছে তার ঘটনাবহুল জীবন নতুন রূপে তুলে ধরার জন্য বইটিকে গ্রাফিক নভেলে রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেন তিনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে গ্রাফিক নভেল হলেও বাংলাদেশে এ ধরনের উদ্যোগ এটাই প্রথম।

একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার দুই মেয়ে কীভাবে জীবন সংগ্রাম করেছেন সে সব ঘটনা নিয়ে ডকুড্রামা ‘হাসিনা: অ্যা ডটার টেইল’ নির্মাণের নেপথ্যে ছিলেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক ইতিহাসের ঘটনাবলী সামনে আনার প্রকল্পগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করছেন তিনি। গ্রাফিক নভেল মুজিব ও ডটারস টেইল দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে।

হোয়াইটবোর্ড নামে একটি ত্রৈমাসিক নীতি নির্ধারণী ম্যাগাজিন সম্পাদনার দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দেশে জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আল জাজিরা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত খ্যাতিমান ব্রিটিশ ব্রডকাস্টার ডেভিড ফ্রস্টের বিখ্যাত অনুষ্ঠান ‘ফ্রস্ট ওভার দ্য ওয়ার্ল্ড’-এ সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয় রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের।

তখন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কারাগারে ছিলেন। ডেভিড ফ্রস্টকে দেওয়া রাদওয়ান মুজিবের ওই সাক্ষাৎকার সে সময় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল এবং শেখ হাসিনার মুক্তি ও জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের জন্য আন্তর্জাতিক জনমত সৃষ্টিতে সহায়তা করেছিল।

পেশাগত জীবনে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক একজন স্ট্র্যাটেজি পরামর্শদাতা। তিনি স্ট্র্যাটেজি ও যোগাযোগ বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও সরকারি সংস্থাকে পরামর্শ দেন।

জন্মদিনে রাদওয়ানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সিআরআইয়ের ফেসবুক পেইজে লেখা হয়েছে, ‘এ ভেরি হ্যাপি বার্থ ডে টু আওয়ার অনারেবল ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। উই উইশ ইউ গুড হেল্থ অ্যান্ড হ্যাপিনেস।’

ইয়াং বাংলার ফেসবুক পেইজে লেখা হয়েছে, ‘উইশিং এ ভেরি হ্যাপি বার্থ ডে টু আওয়ার মেন্টর অ্যান্ড সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। ইয়াং বাংলা অ্যাপ্রিসিয়েটস ইউর গাইডেন্স অ্যান্ড রিলেন্টলেস এফোর্টস টুয়ার্ডস ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট।’

খবর: বাসস