চালের কৃত্রিম সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশের অনেকগুলো বড় কোম্পানি খোলা চাল কিনে প্যাকেট করে বিক্রি করছে। এ জন্য বাজারে চালের দাম বেড়ে গেছে। আইন করে এদের এসব কাজ বন্ধ করা যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে চালের অভাব নেই। প্রয়োজন অনুযায়ী চাল বাজারে আছে। যেটা হচ্ছে সেটা কৃত্রিম সংকট। এটা যারা করছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ কিনছে বলেই করপোরেট কোম্পানিগুলো প্যাকেট করে চাল বিক্রি করছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আগের চেয়ে বেড়েছে।’ এটাকে জোর করে বন্ধ করার উপায় নেই বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

তবে, চালের দাম কমাতে প্যাকেটজাত চাল বন্ধ করার জন্য যদি খাদ্য মন্ত্রণালয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সহায়তা চায় সেটা করা হবে জলেও জানান টিপু মুনশি।

মন্ত্রী বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতি উন্নতি না হয়, ততদিন স্বল্প দামে ১ কোটি মানুষকে পণ্য দেওয়া  হবে। আগামী ১৫ জুন থেকে এক কোটি মানুষকে কম দামে পণ্য দেওয়া শুরু হবে। আগের মতো ছয়টি পণ্যই দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘পাম তেলের দাম আগের চেয়ে কমেছে। আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে অন্যান্য ভোজ্য তেলের দাম কমে আসবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৭ কোটি মানুষের মধ্যে তিন কোটি মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে। আমি কখনোই বলিনি, ১৭ কোটি মানুষের পয়সা বেশি হয়েছে। রিয়েলিটি হলো, ২০ ভাগ মানুষের লো ইনকাম, সেটাকে কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। ১৭ কোটি থেকে ৩ কোটি বাদ দিলে ১৪ কোটি থাকে।’

তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা প্রায় ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড ইউরোপের মতো। আমাদের দরিদ্র শ্রেণির ৩ কোটি মানুষকে অ্যাডজাস্ট করা দরকার, সেটাই করছি। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে সেটা আপনারাও জানেন।’

টিপু মুনশি বলেন, ‘আমাদের দেখা দরকার সাধারণ মানুষ সঠিক মূল্যে পণ্য কিনতে পারছে কিনা। ক্রয়ক্ষমতাও দুইটি দিক রয়েছে, একটি হলো যারা উৎপাদনকারী এবং যারা ভোক্তা। আমরা যদি এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যাই যে উৎপাদনকারী আর ইন্টারেস্ট পাচ্চ্ছে না, তাহলে কিন্তু প্রভাব পড়বে। আমাদের দেখতে হবে উৎপাদন খরচ, প্রফিট, মার্জিন কতোটা থাকা উচিত এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রাইজের ক্ষেত্রে যেন কেনোভাবে বড় ধরনের পার্থক্য না থাকে। এটা দেখার জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় যেভাবে আমাদের সাহায্য চাইবে আমরা করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কথা হলো নিম্ন আয়ের মানুষের স্বার্থ দেখা। যার টাকা আছে, তিনি কী করবেন সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের কথা হলো ন্যায্য মূল্যে যেসব পণ্য পাওয়া উচিত, সেটা আমরা অবশ্যই দেখবো। খাদ্য মন্ত্রণালয় যখন আমাদের ডাকবে তখন আমরা অবশ্যই যাবো।’