আওতা বাড়ছে জেন্ডার বাজেটের, প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত

জেন্ডার বাজেটের আকার ও পরিধি বাড়ানো হয়েছে। একইসঙ্গে নারীর অধিকার নিশ্চিত ও জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণের জন্য প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জগুলোও চিহ্নিত করা হয়েছে।

বাজেট প্রতিবেদন ২০২২-২৩ এ জেন্ডার বাজেটের তিনটি থিমেটিক এরিয়াতে সম্ভাব্য বরাদ্দ উল্লেখ করা হয়েছে। নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, বাজেটে সুনির্দিষ্ট যা বলা হয় তার প্রতিফলন বাস্তবায়নের সময় দেখা যায় না বলে পরিবর্তন দৃশ্যমান হয় খুব সামান্য।

প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ অর্থবছরের বাজেটে জেন্ডার সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ হয় ১ লাখ ৯৮ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা যা মোট বাজেটের ৩২ দশমিক ৭৮ শতাংশ ছিল (জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ)।

২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের মোট বরাদ্দের ৩৩ দশমিক ৮৪ ভাগ জেন্ডার সংশ্লিষ্ট যা জিডিপির ৫.১৬ শতাংশ।

নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি, উৎপাদন, শ্রমবাজার ও আয়বর্ধক নারীর ও সরকারি সেবা প্রাপ্তিতে নারীর সুযোগ বৃদ্ধি তিন থিমে ৪৪টি মন্ত্রণালয়কে জেন্ডার বাজেটের আওতায় আনা হয়ে থাকে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগের বাজেটে জেন্ডার সংশ্লিষ্ট বাজেট বরাদ্দ শতকরা হার যথাক্রমে ৬৯.৭১, ৬০.২১, ৫০, ৪৪.৭৩ এবং ৪৩.০৪ শতাংশ।

জেন্ডার বাজেট প্রতিবেদনে নারীর কাজের নানা প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করা আছে। চ্যালেঞ্জগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় শিক্ষার সকল ক্ষেত্রে সমধর্মী চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।

এছাড়া ধর্মীয় অনুশাসনের অপব্যবহার, ইভটিজিং, যৌন হয়রানি, শিক্ষা ক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব, অসৌজন্যমূলক ব্যবহার ও আনওয়েলকামিং অ্যাটিটিউড ইত্যাদি প্রতিবন্ধকতার কথাও বারবার উঠে এসেছে।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর জেন্ডার অ্যাডভাইজার বনশ্রী মিত্র নিয়োগী বলেন, ‘আমরা যখন দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ বলতে চাইছি তখন অর্থনৈতিক পরিসরে নারীর অংশগ্রহণ অবশ্যই বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে কেয়ারগিভার কাজের জায়গায়, গৃহস্থালী আনপেইড কাজগুলোতে এনার্জি বাজেট বাড়াতে হবে। মূল কথা হলো, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। জেন্ডার বাজেট সেসব জায়গা থেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। নারীকে কাজে অংশগ্রহণ করানোর ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকবে। সেটা থাকবে বলে নারীকে দূরে রাখার সুযোগ নেই। জরুরি হলো, সামাজিক বাধাগুলো চিহ্নিত করে সেটা অপসারণ করার কৌশল নির্ধারণ করা।’

উল্লেখ্য, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে নারী উন্নয়ন বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড রয়েছে এমন চারটি মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত করে প্রথম জেন্ডার বাজেট প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।

ধীরে ধীরে মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪০টি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৩ মন্ত্রণালয় বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২২ অর্থবছরে নারী উন্নয়ন সংক্রান্ত কার্যক্রম ও অগ্রাধিকার রয়েছে এমন ৪৪টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের বিষয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।