এখানে দুর্ভিক্ষ হবে না: কৃষিমন্ত্রী

বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘বিদেশ থেকে যদি খাবার নাও আসে, আমাদের এখানে দুর্ভিক্ষ হবে না। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।’

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে শুক্রবার (১০ জুন) রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা এমন কতগুলো জাত আবিষ্কার করেছেন, যার মাধ্যমে আমাদের উচ্চ ফলনশীল ধান হচ্ছে। আমরা ১৫ টাকা কেজিতে আড়াই কোটি মানুষকে খাবার দেবো। গরিব মানুষকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। পুষ্টির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। চালের ওপর চাপ কমিয়ে পুষ্টি গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।’   

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চালের দাম বেড়েছে। কেননা, আমাদের বেশিরভাগের মধ্যে চিকন চাল খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। মোটা চালের দাম কিন্তু ৪৩-৪৬ টাকার মধ্যে রয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ৬০-৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে সরকার নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পটাশিয়াম সারের যে দাম, তার চার ভাগের একভাগ দামে এখানে পটাশিয়াম কেনা যায়। ডিএপির দামও আন্তর্জাতিক বাজারে বেশি। এগুলোতে অনেক বেশি ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এগুলো কিন্তু গ্রামের চাষিরা পাচ্ছে। ডিলারের মাধ্যমে দেওয়া হয়। এগুলো না দিলে উৎপাদন কমে যেতো। অবস্থা অনেক খারাপ হতো।’

একই সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘চালের বাজারসহ অন্যান্য পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের অ্যাকশন অব্যাহত আছে। এর আগেও বলেছি, আবারও কথা দিচ্ছি, বাজারে অস্থিরতা থাকবে না। সরকার এখানে কমিটেড।’

তিনি বলেন, ‘বাজারের অস্থিরতা সারা বিশ্বে আছে। গত এক বছরে সারা বিশ্বে অনেক পণ্যের দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে। তাই আমাদের এখানেও বেড়েছে। দেশীয় প্রডাক্টের দাম আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক প্রডাক্টের ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। সারা বিশ্ব আমরা একীভূত।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের যেন সঙ্গতি থাকে সেটা মাথায় রেখে এই বাজেট দেওয়া হয়েছে।’

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সব শ্রেণির মানুষই উপকৃত হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গরিব হওয়া কত কষ্টের আমি হাড়ে হাড়ে বুঝি। তাই প্রত্যেকটি গরিব মানুষকে সামনে রেখে আমরা এই বাজেট দিয়েছি।’

বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ কিন্তু একটা অপরচুনিটিও নিয়ে আসে। আমরা অপরচুনিটিতে বিশ্বাসী।’

কালো টাকা সাদা করার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘টাকা ডিজিটাল মাধ্যমে পাচার হচ্ছে। নরওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ উন্নত দেশও এ ধরনের সুযোগ দেয়। নানা কারণে টাকা পাচার হয়, কোনও প্রমাণ ছাড়া এগুলোর বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া যায় না। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যাকশনও নেওয়া হচ্ছে প্রমাণ সাপেক্ষে। এগুলো আমরা চেষ্টা করছি ফেরত আনতে। আপনারা বাধা দিয়েন না। বাধা দিয়ে লাভ কী।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এগুলো কালো টাকা না বলে অপ্রদর্শিত অর্থ বলি। আমরা এ দেশের মানুষের কল্যাণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরের বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা; যা মোট জিডিপির প্রায় ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ (বাজেট) অধিবেশনে ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা প্রত্যাবর্তন’ শীর্ষক বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।