বাংলাদেশে যুদ্ধের প্রভাব কম পড়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমিত করতে বাংলাদেশ সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের অভিঘাত বিশ্বের অনেক উন্নত ও অধিকতর সক্ষম দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেকটাই কম পড়েছে।’

রবিবার (১২ জুন) সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।

গণফোরামের মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর এ যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব বহুমাত্রিক, বাংলাদেশেও এ যুদ্ধের বহুমাত্রিক প্রভাব রয়েছে।’

এই প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও বিচক্ষণ নির্দেশনার ফলে ইউক্রেইন যুদ্ধের অভিঘাত বিশ্বের অনেক উন্নত ও অধিকতর সক্ষম দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেকটাই কম পড়েছে। সরকার রাশিয়া–ইউক্রেইন যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাবকে প্রশমিত করতে ভালোভাবেই সক্ষম রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের ফলে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে, যা ভোক্তার মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিয়েছে। যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিলাস দ্রব্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। রেমিট্যান্স বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে কতিপয় বাস্তব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান যৌক্তিক রাখতে সরকারি কর্মকর্তাদের সব ধরনের এক্সপোজর ভিজিট, স্টাডি ট্যুর, ওয়ার্কশপ, সেমিনারে বিদেশ গমন বন্ধ করা হয়েছে। ব্যাংকারদের ক্ষেত্রেও একই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

সরকারি দলের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভারতের বিভিন্ন কারাগারে এক হাজার ৮৫০ জন বাংলাদেশি নাগরিক আটক বা বন্দি রয়েছেন। এরমধ্যে বেশিরভাগই পদ্ধতিগত কারণে অনিয়মিত অবস্থানের দায়ে অভিযুক্ত। আর মিয়ানমারে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত ৬৩ জন আটক রয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সংশ্লিষ্টরা কারাগারে আটক থাকা বাংলাদেশি নাগরিকের বিষয়ে অবহিত করলে বা অন্য কোনও মাধ্যমে সংবাদ পেলে ভারতে বাংলাদেশ মিশনগুলো  কারাগারে আটক বাংলাদেশির বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেয়।’

মন্ত্রী জানান, বর্তমানে মিয়ানমারে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত ৬৩ জন আটক আছেন। যারা অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করছেন। তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হলে প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হবে। মিয়ানমারে আটক ৬৩ জনের মধ্যে ১৩ জনের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকি ৫০ জনের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া চলমান।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভারত, মালদ্বীপসহ ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, বাহরাইন, লেবানন, ফিলিস্তিন, মরিশাস, হাইতি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে।’

নারী মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়েছে

সরকারি দলের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘দেশের সরকারি ও বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রে মাদকাসক্তের চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণকারীদের তথ্য অনুযায়ী, নারী মাদকাসক্তের সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে।’ তবে কী পরিমাণ বেড়েছে তা মন্ত্রী জানাননি।