জয়শঙ্করের সঙ্গে যেসব আলোচনা হলো মোমেনের

আইনি প্রক্রিয়া শেষে পি কে হালদারকে ফেরত পাঠাবে ভারত। এমনটা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এছাড়া পদ্মা সেতুর জন্য অভিনন্দনও জানিয়েছে দেশটি। বিষয়গুলো নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দিল্লিতে জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।

সোমবার (২০ জুন) রাতে দিল্লি থেকে ঢাকায় ফেরার পর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি। দিল্লি সফরে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, বাণিজ্যমন্ত্রী, জ্বালানিমন্ত্রীসহ অনেকের সঙ্গে দেখা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।

বৈশ্বিক সমস্যার কারণে এ অঞ্চলে যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে সেটা নিয়ে জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। অন্য জায়গায় সংঘাত হলে আমাদের ওপর কম প্রভাব পড়ে। আমরা এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবো। এ অঞ্চলে একটা দেশ সমস্যায় পড়েছে এবং এ ধরনের ঝামেলা যেন আর না হয় সেজন্য আমাদের একে অপরকে সহায়তা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সাপ্লাই চেইন ও স্থিতিশীলতা যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য একসঙ্গে কাজ করতে আমরা সম্মত হয়েছি।

বাংলাদেশ ভারত থেকে ১০ লাখ টন গম আমদানি করবে জানিয়ে তিনি বলেন, মাঝে তারা কিছু বিধিনিষেধ দিয়েছিল। এখন তুলে নিয়েছে। যারা ইতোমধ্যে এলসি খুলেছে তারা আমদানি করতে পারবে। ভারত এটা যাচাই-বাছাই করবে।

 

প্রধানমন্ত্রীর সফর

দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফর নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিষয়ে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ নিয়ে আলোচনা করছি। আগস্টে যাওয়া যাবে না। এছাড়া সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় ভাগে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন। তারাও সেভাবে একটি তারিখ দিয়েছে।

আব্দুল মোমেন বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।

উল্লেখ্য গত এপ্রিলে জয়শঙ্কর ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রীকে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

 

জেআরসি

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পানিসম্পদমন্ত্রীদের বৈঠক জেআরসির জন্য বারবার তাগাদা দিলেও ভারত এ বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বারবার উদ্যোগ নিয়েছি জেআরসি বৈঠক করার। কিন্তু তারা শুধু বলে যে হবে। এখনও নির্দিষ্ট তারিখ পাইনি। আশা করবো প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে জেআরসি বৈঠক হবে।

তিনি আরও বলেন, কয়েকটি নদীর সীমানা চিহ্নিত করা নিয়ে সমস্যার কথা উঠেছে। এবারের বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়েছে যে যৌথভাবে এটি পর্যবেক্ষণ করা হবে।

বাংলাদেশে বন্যা ঠেকানো যাবে না। কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারতকে অনুরোধ করেছি তারা যদি আগেভাগে আমাদের ঢলের বিষয়ে সতর্ক করে তবে আমরা প্রস্তুতি নিতে পারি। এ বিষয়ে তারা নীতিগতভাবে সম্মত।

 

বাণিজ্য

দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে মোট বাণিজ্য ১৬০০ কোটি ডলার এবং ভারতের হিসাব মতে ১৮০০ কোটি ডলার। এরমধ্যে আমাদের রফতানি ২০০ কোটি ডলার। এটি বাড়ানো দরকার।

বাংলাদেশের কিছু পণ্যের ওপর ভারত অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে এবং সেটা প্রত্যাহারের জন্য সরকার অনুরোধ করেছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তাদের বলেছি এর দ্রুত সমাধান না হলে এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ বাড়তে পারে, যা কারও জন্য ভালো হবে না। এজন্য তাদেরও এগিয়ে আসা উচিত। তারা চেষ্টা করবে বলেছে।

‘সীমান্তে মালামাল নিয়ে ভারতের অনেক ট্রাককে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়। আমাদের সঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের সদস্যও গিয়েছিলেন। কীভাবে এই সময় কমানো যায় তা যৌথভাবে পরীক্ষা করে দেখা হবে।