‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় সরকার সতর্ক রয়েছে’

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী যে সংকট তৈরি হয়েছে তার প্রভাব মোকাবিলায় সরকার সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে একশন এইড বাংলাদেশ ও সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকনোমিক মডেলিং (এসএএনএম) আয়োজিত ‘যুব জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ঝুঁকি: উন্নয়ন নীতি এবং বরাদ্দ পরিকল্পনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বের প্রায় সব দেশই কৃচ্ছ্র সাধন নীতি অনুসরণ করছে। জ্বালানি সংকট, খাদ্য দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিসহ আমদানি-রফতানির ওপর প্রভাব পড়েছে। আর এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, পুরো বিশ্বে। শুধু টাকার মান কমেছে এটি সঠিক নয়। ইউরো, ইয়েন ও রুপিসহ অনেক দেশের মুদ্রার মান কমেছে।’

তিনি জানান, সব দেশের সরকারই একটি লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য পলিসি গ্রহণ করে কাজ করে। পৃথিবীর কোনও দেশই গৃহীত পলিসি শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারে না। সম্ভবও নয়। পরিবর্তন একদিনে আসে না। সময়ের ব্যবধানে ধীরে ধীরে একটি দেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছে।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে রুপান্তরিত করতে হলে যুবসমাজকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যুবারা দেশের শক্তি। আগামীর উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নের সারথী। তাদের অংশগ্রহণ দেশকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ করে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিতে পথনকশা তৈরি করেছেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করে চলেছেন। দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে, সাফল্যের গল্প আছে। এগুলো অস্বীকার করার কোনও সুযোগ নেই। সমালোচনা থাকবেই। কোনও দেশের সরকার সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সাফল্য নেই, এ কথা ঠিক নয়। এক সময় দেশে মানুষ অনাহারে থাকতো। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। অর্থনৈতিক অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। খাদ্য ঘাটতি দূর করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ কৃষি, শিল্প কলকারখানা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি সব খাতে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে এক সময় রাস্তাঘাটে চলাচল করা যেতো না। নারীরা রাতের বেলা বের হতে পারতো না। মানুষের মধ্যে সবসময় এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করতো। কিন্তু এখন আর সেই সময় নেই। দেশের মানুষ নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারছে। নারীরা রাতের বেলা চলাচল করছে নিরাপদে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে দেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারছে। দেশের মানুষকে সুখে ও নিরাপদে রাখাই সরকারের মূল লক্ষ্য।’

একশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিজ ফারাহ কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যক্ষ এবং সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক শাকিল আহমেদ।