‘সবাইকে এক মঞ্চে নিয়ে বিশেষ সংলাপে বসবে ইসি’

সদ্য সমাপ্ত সংলাপ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ পর্যালোচনা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) শিগগিরই একটি কৌশলপত্র প্রস্তুত করবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। ওই কৌশলপত্র নিয়ে সবাইকে একই মঞ্চে নিয়ে বিশেষ সংলাপে বসবেন বলেও জানান এই কমিশনার।

সোমবার (১ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আলমগীর জানান, ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবগুলো নিয়ে তারা পর্যালোচনা শুরু করে দিয়েছেন। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই খসড়াটি চূড়ান্ত হবে। এরপর ফের গণমাধ্যম, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ জন ও দলগুলোকে ডাকা হবে। এ ক্ষেত্রে ডাকা হবে প্রথম সংলাপে সাড়া না দেওয়া বিএনপিকেও।

তিনি বলেন, ‘বিশেষ সংলাপটি অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী। সেখানে সবাই এক মঞ্চে থাকবে। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রুপ থেকে চার-পাঁচ জন করে অংশ নেবে। সংলাপে কৌশলপত্রটি উপস্থাপন করে অংশীজনের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হবে। এরপর সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত কৌশলপত্র প্রণয়ন করবে নির্বাচন কমিশন।’

আলমগীর বলেন, ‘বিশেষ সংলাপে আমাদের কৌশলপত্রে উদ্দেশ্য, লক্ষ্য, সুবিধা-অসুবিধা, অর্থ সংক্রান্ত বিষয়, লোকবল, চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি থাকবে। যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে, সেগুলো কীভাবে মোকাবিলা করতে পারি, তা নিয়ে আলোচনা হবে।’

তিনি বলেন, ‘সংলাপ থেকে আসা প্রস্তাবে তথ্য ঘাটতি আছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে কিছু বলা যাবে না। সব রেকর্ড রেখেছি। এখন পর্যালোচনা করছি। কিছু কিছু সুপারিশ আছে সংবিধান ও আইনের মধ্য থেকে করতে হবে। কিছু আইনের পরিবর্তন নিয়ে। কিছু আছে ইসির এখতিয়ারের মধ্যে নয়। এখনও আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’

এই কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচন কিন্তু বেশ দূরে। অনেক পরিবর্তন আসবে। আগামী বছরের অক্টোবর, নভেম্বরের দিকে নির্বাচনের পরিবেশ কেমন হবে তখন বোঝা যাবে। মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করা, একটু পরিচিত হওয়া, মানুষ যেন মন খুলে আলোচনা করতে পারে– এ জন্য আমরা খোলামেলা প্রাথমিক আলোচনা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আগের কমিশন আগে রোডম্যাপ করে আলোচনা করেছে। আমরা আলোচনা করে রোডম্যাপ করবো।’

মো. আলমগীর বলেন, ‘একজন বলেছেন, অনলাইনে ভোট নেওয়ার জন্য। এটা তো এখনই পারবো না। আলোচনা করতে করতে যেটা বাস্তব, সেটা নেবো। হয়তো খুব ভালো পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটা হয়তো এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। রোডম্যাপ করার পরে আপনাদের সঙ্গে আবার আসবে বিশেষ আলোচনা।’

তিনি বলেন, ‘তখন হয়তো পাঁচটা গ্রুপ একসঙ্গে বসে আলোচনা হবে। প্রত্যেক গ্রুপ থেকে হয়তো কয়েকজন করে আসবে। এ ক্ষেত্রে যেই দাবিগুলো খুব বেশি, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এবারের মতো বিভিন্ন মহলের সঙ্গে পৃথক পৃথক নয়। দিনব্যাপী আলোচনা হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে অবশ্যই ডাকবো। আমাদের কাছে সবার গুরুত্ব সমান।’

 

মিডিয়ার সাপোর্ট চাইবে ইসি

সাংবাদিকদের উদ্দেশে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, ‘আমাদের মিডিয়ার সাপোর্টও লাগবে। আপনারা হয়তো সব চাওয়া পূরণ করতে পারবেন না। আমরা যদি ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রে কভারেজ চাই, আপনারা হয়তো দিতে পারবেন না। এসব নিয়ে বিশেষ সংলাপে আলোচনা হবে। খসড়াটা শেয়ার করবো– দেখেন, কোনও সাজেশন আছে কিনা। লজিক্যালি যদি বলতে পারেন, এটা বাদ দিতে হবে। আমরা দেবো।’

 

সব কেন্দ্রে সেনা হবে না

নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, ‘একটা রাজনৈতিক দলের একজন প্রস্তাব দিলো সব কেন্দ্রে সেনাবাহিনী দেওয়ার জন্য। তাকে প্রশ্ন করলাম, ৪০ হাজার কেন্দ্র আছে। সব কেন্দ্রে সেনা দিতে কত আর্মি দরকার? আমাদের তো এত অফিসার ও সেনা নেই। ক্যান্টনমেন্ট খালি করে দিলেও; এমনকি নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী দিলেও হবে না। তখন তিনি বললেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দেবেন। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দিলেও হিসাব করতে হবে।’