‘এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে গেলে আন্তসম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে’

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুবিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে গেলে এনআইডি ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মধ্যে আন্তসম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ ইসির অধীনে রাখার ক্ষেত্রে বর্তমান কমিশন সন্তুষ্ট হলে এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করা হবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বুধবার (৩১ আগস্ট) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব মন্তব্য করেন। এর আগে এনআইডি ইসির অধীনে রাখার ব্যবস্থা নিতে সিইসিকে স্মারকলিপি দেয় বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। তারা এনআইডি ইসির কাছে রাখার বিষয়ে তাদের যুক্তি তুলে ধরেন।

এ বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে এনআইডি নেওয়ার জন্য আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১৫ বা ১৮ বছর ধরে এনআইডির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের মাধ্যমেই এনআইডি উঁচু পর্যায়ে গেছে। এর সঙ্গে ভোটার তালিকার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত বলেও তারা মনে করছেন। এখন তা অন্য সংস্থার কাছে চলে গেলে নির্ভরশীলতার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তারা দাবি জানিয়েছেন, বিষয়টি যেন আমরা সরকার বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোচরে নেই। উনাদের চাহিদা হচ্ছে—এতদিন এনআইডি যেভাবে ছিল সেভাবেই যেন থাকে।’

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘তবে আমাদের এখান থেকে চলে গেলে এনআইডি ও আমাদের মধ্যে যে একটা ইন্টাররিলেশন, সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আমরা আলাপ-আলোচনা করে যদি কনভিন্সড হই, তাহলে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কিছু আলাপ করবো।’

সিইসি বলেন, ‘তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছি, এটার সঙ্গে সায়েন্টিফিক ও টেকনিক্যাল বিষয় আছে। আমি কিছুটা বুঝি, অনেকটাই বুঝি না। উনাদের সঙ্গে বসে আরও ভালো করে বুঝবো। যদি আমরা কনভিন্সড হই, এনআইডিটা আমাদের এখানে (ইসিতে) থাকলেই ভালো হবে, তাহলে এনআইডি সার্ভিস যেমন পাচ্ছে—ওরা আগের মতোই পেতে থাকবে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সরকার অবশ্যই এনআইডি'র বিষয়টি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবে। আমাদের দিক থেকে যদি কোনও পয়েন্ট থাকে যে এটা আমাদের জন্য সুবিধা হবে, তাহলে সেটা অবশ্যই আমরা সরকারকে বলতে পারি।’

এদিকে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের সই করা স্মারকলিপিতে এনআইডি সেবা ও এর ইতিহাস তুলে ধরে তা ইসির অধীনে রাখার পক্ষে বিভিন্ন ধরনের যুক্তি তুলে ধরা হয়। সিইসিকে স্মারকলিপি দেওয়ার সময়ে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২ অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান, নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আব্দুল বাতেনসহ ইসির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।