বর্ডার রিং রোড প্রকল্পের কাজ সফলতার সঙ্গে এগিয়ে চলছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সদ্য বিজিবিতে যোগ দেওয়া নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘সীমান্তে চোরাচালান রোধে আপনাদের অর্জন করতে হবে পেশাগত দক্ষতা এবং ব্যক্তিগতভাবে হতে হবে সুশৃঙ্খল যা বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝেও থাকতে হবে সুদৃঢ়, নির্লোভ ও নির্ভীক। লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।’

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ট্রেনিং সেন্টার ও কলেজ মাঠে ৯৮তম নবীন রিক্রুট ব্যাচের শপথ গ্রহণ ও প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

শপথ গ্রহণ ও প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে ৮৪৯ জন রিক্রুটের মধ্যে ৮০৩ জন পুরুষ ও ৪৬ জন নারী রিক্রুট মৌলিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। বায়তুল ইজ্জত ছাড়াও সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় চুয়াডাঙ্গায়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে সীমান্তে নতুন বিওপি, বিএসপি নির্মাণসহ অত্যাধুনিক সার্ভেইলেন্স ইকুইপমেন্ট স্থাপন, আধুনিক এন্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন, এটিভি ও অত্যাধুনিক এপিসি, ভেহিক্যাল স্ক্যানার ও দ্রুতগামী জলযান সংযোজন করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সাহসী পদক্ষেপে বর্ডার রিং রোড প্রকল্পের কাজ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে এগিয়ে চলছে। বিজিবির এই অগ্রযাত্রায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব সময় আপনাদের পাশে আছে এবং থাকবে।

নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকদের মধ্যে তারই প্রতিফলন আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত ও মুগ্ধ করেছে।’

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের চারটি মূলনীতি─মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলোয় উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে তোমাদের ওপর অর্পিত যেকোনও দায়িত্ব সুশৃঙ্খল ও সুচারুরূপে পালন করতে হবে। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিজিবির প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সীমান্ত প্রহরার মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্বের অখণ্ডতা রক্ষা করা। এই মহান দায়িত্ব পালনে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই বাহিনীকে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও অত্যাধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামোকে ব্যাপক পরিবর্তন করে বিজিবি আজ একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে জল, স্থল ও আকাশপথে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়েছে।

নবীন নারী সৈনিকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও সমান ভূমিকা রাখতে হবে। মনে রাখবেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মহীয়সী নারীদের অংশগ্রহণ, অবদান ও আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয়। আজ নারীরা বিভিন্ন অঙ্গনে যথাযথ যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। আজ আপনারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সৈনিক জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনারা বিজিবির সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আরও গতিশীল ভূমিকা রাখাসহ বাহিনীর সুনাম বাড়াতে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন।’

বিজিবি বর্তমানে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে বাংলাদেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষা, সীমান্ত ভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করছে। এ বাহিনী সীমান্তে চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচারসহ যেকোনও ধরনের সীমান্তের অপরাধ দমনেও কাজ করছে।