প্রধানমন্ত্রী ৫০টি শিল্প ইউনিট ও প্রকল্প উদ্বোধন করবেন ২৬ অক্টোবর

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ২৬ অক্টোবর দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইজেড) ৫০টি শিল্প ইউনিট, প্রকল্প ও ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ইজেডগুলোতে ভার্চুয়ালি ৫০টি শিল্প ইউনিট, প্রকল্প ও ভবন উদ্বোধন করবেন। আটটি ভেন্যুতে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করবে বেজা। এর মধ্যে চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে (বিএসএমএসএন) চারটি কারখানার বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং বেসরকারিভাবে পরিচালিত বিভিন্ন ইজেডে আটটি কারখানা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই শিল্প ইউনিটগুলোতে ইতোমধ্যে ৯৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ হয়েছে এবং আরও প্রায় ৩৩ কোটি ১২ লাখ ৭০ হাজার ডলার বিনিয়োগ করবে।’

উদ্বোধন হতে যাওয়া ইজেড সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএসএমএসএন, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, শ্রীহট্ট ইজেড এবং সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের প্রশাসনিক ভবন। বেজা প্রধান বলেন, এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে বিএসএমএসএন-এ ২০ কিলোমিটার শেখ হাসিনা সরণি, ২৩০ কেভিএ গ্রিডলাইন ও সাবস্টেশন উদ্বোধন করবেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন ৫০ মিলিয়ন লিটার (এমএলডি) পানি পরিশোধন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

উদ্বোধন হতে যাওয়া শিল্প কারখানার মধ্যে চারটি স্থাপনা বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে। এইগুলোর একটি ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রিফেব্রিকেটেড স্ট্রাকচারাল স্টিল তৈরি করে, যা ইস্পাত সেতু ও উঁচু ভবন, কারখানা এবং পাওয়ার প্ল্যান্টে ব্যবহৃত হয়। নিপ্পন এবং ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড আমদানি করা ইস্পাত, পারলিন, স্লিটিং শিট এবং কয়েল থেকে এমএস প্লেট উৎপাদন করে।

এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড পেইন্ট ও সংশ্লিষ্ট পণ্য, ইমালসন উৎপাদন করে। কোম্পানিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৩৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। পিএইচসি পাইলের প্রস্তুতকারক সমুদা কনস্ট্রকশন লিমিটেড ৮ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে ৪ একর জমিতে তাদের কারখানা নির্মাণ করছে।

বেজা জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য শিল্প, কর্মসংস্থান, উৎপাদন এবং রফতানি বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণের মাধ্যমে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পিছিয়ে পড়া ও অনুন্নত অঞ্চলসহ বাংলাদেশের সকল সম্ভাব্য এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা। পরিকল্পিত ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সরকার ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চল অনুমোদন করেছে, যার মধ্যে ২৮টি বর্তমানে উন্নয়নাধীন রয়েছে।

এখন পর্যন্ত ১২টি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিচালনার লাইসেন্স পেয়েছে এবং এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে স্থাপিত এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো বার্ষিক  ৪০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য উৎপাদন এবং রফতানি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিনিয়োগকারীরা অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর অবকাশ, শুল্কমুক্ত কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি সুবিধা পাবেন। জাপান, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া এবং নরওয়েসহ বিভিন্ন দেশ সরাসরি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করেছে। খবর বাসস।