জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দিন, সাব-রেজিস্ট্রারদের আইনমন্ত্রী

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে বলেছেন, জনগণকে কোনও হয়রানি না করে দ্রুততম সময়ে সর্বোত্তম সেবা প্রদান করতে হবে এবং জাল-জালিয়াতি রোধে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাব-রেজিস্ট্রারদের জন্য আয়োজিত দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে সব মানুষ ভোগান্তিহীনভাবে দ্রুত নাগরিক সেবা পাবেন। সমাজ, অর্থনীতি, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, যোগাযোগ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলস ও নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তিনির্ভর, আধুনিক, কর্মদক্ষ ও মেধাসম্পন্ন জনশক্তি তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। ফলে দৈনন্দিন সাধারণ কাজকর্ম থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে নাগরিকরা আজ প্রযুক্তির সহায়তায় সেবাগ্রহণে তৎপর হয়ে উঠেছেন। নতুন প্রজন্ম সহজাত প্রবণতায় শুরু থেকেই সময়োপযোগী টেকনোলজির সঙ্গে পরিচিত হয়ে বেড়ে উঠছে।’

তিনি বলেন, ‘সেবার ধরন বদলে যাওয়ায় অপেক্ষাকৃত বয়োবৃদ্ধ নাগরিকরাও অনলাইন সেবা গ্রহণে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। দেশের এই অগ্রযাত্রায় রেজিস্ট্রেশন বিভাগকে পিছিয়ে থাকলে চলবে না। এ বিভাগের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও যুগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সেবাপ্রার্থী জনগণকে দ্রুত প্রযুক্তিনির্ভর সেবা প্রদানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের চিন্তা-চেতনা ও মনমানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।’

আনিসুল হক বলেন, ‘জনগণকে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর মানসম্মত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার নিবন্ধন অধিদফতরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করে সব ভূমি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াকে ডিজিটাইজড করতে চায়। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে আমরা ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ই-রেজিস্ট্রেশন পাইলটিং প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতার আলোকে সারা দেশের সব সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ডিপিপি তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১২২১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সারা দেশে ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হলে কোনও জটিলতা ছাড়াই নির্ভুলতার সঙ্গে হয়রানিমুক্ত পরিবেশে দলিলের দাতা এবং গ্রহীতা রেজিস্ট্রেশন কার্য সম্পাদন করতে পারবেন। ফলে সরকারি রাজস্ব আদায়েও গতিশীলতা বাড়বে। এছাড়া সারা দেশের রেকর্ড রুমে রক্ষিত বালাম বই ই-আর্কাইভে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যাবে। অনলাইন ব্যবস্থায় রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু হলে জনগণ সহজেই নিবন্ধিত দলিলের অনুলিপি তাৎক্ষণিক সংগ্রহ করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ বহুলাংশে হ্রাস পাবে এবং জাল-জালিয়াতিও উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে।’

নিবন্ধন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুকের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তৃতা করেন।