একসময় রাষ্ট্রদূতেরা এদেশে নিজেদের কিং মনে করতেন: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে বাংলাদেশে বিদেশি বা রাষ্ট্রদূতদের হস্তক্ষেপমূলক তৎপরতা অনেক কমে এসেছে। একসময় হ্যারি কে টমাসের মতো অনেক রাষ্ট্রদূত এ দেশে নিজেদের কিং বা রাজা মনে করতেন। এখন এই পরিস্থিতি নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন ও আর্থিক অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ আজ অনেক মর্যাদাশীল জাতি।

তিনি আরও বলেন, দেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশিদের কাছে বিএনপির ধরনা দেওয়া বা হাত পাতা জাতির জন্য মর্যাদার নয়। এবং এটিকে সহজভাবে মেনে নেওয়া যায় না। 

বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দফতরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এ সময় আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বিএনপি আগুন সন্ত্রাস, আন্দোলন, হরতাল, অবরোধ, গণসমাবেশ করে বৈধ সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। আগামী ১১ তারিখ না, আগামী ডিসেম্বরের ১১ তারিখের মধ্যেও সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না বিএনপি। আগামী ১১ তারিখ বিএনপি আন্দোলনের নামে যাতে অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ তৎপর থাকবে। দলের নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারকে সহযোগিতা করবে।

এর আগে কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎকালে দুই দেশের কৃষি, কৃষি যন্ত্রপাতি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, জলবায়ু সহনশীল কৃষি, বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি ইত্যাদি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। এসময় কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।

এসময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কৃষি যান্ত্রিকীকরণের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার কৃষিযন্ত্রে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। আগামীতে বাংলাদেশে প্রচুর কৃষি যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে ভারতের কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের ফ্যাক্টরি স্থাপন করে স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি ও অ্যাসেম্বল এবং খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পারে।

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা জানান, ভারতের মাহিন্দ্রসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যাতে বাংলাদেশে তাদের ফ্যাক্টরি স্থাপন করে স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি ও অ্যাসেম্বল এবং খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরিতে বিনিয়োগ করে সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া তিনি দুই দেশের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সমঝোতা স্মারকে আগ্রহ ব্যক্ত করেন। 

এসময় কৃষিমন্ত্রী গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ ও পাটবীজের জন্য ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, এ বছর ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ এনে দেশে চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। এছাড়া কৃষিমন্ত্রী বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ, বীজ প্রযুক্তি, কাজুবাদাম, কফিসহ উন্নতজাতের চারা সরবরাহ, অ্যাগ্রো প্রসেসিং, ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি এবং সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা মোকাবিলা, মাদক ও মানবপাচার রোধ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন।